You are currently viewing মালদা জেলা – প্রাচীন ঐতিহ্য About Malda District

মালদা জেলা – প্রাচীন ঐতিহ্য About Malda District

মালদা পরিচিতিঃ

মালদহ জেলার নামকরণ এই জেলার আদি বাসিন্দা  মলদ কৌমগোষ্ঠীর নাম থেকে। অন্যমতে ফারসি মাল(ধনসম্পদ) ও বাংলা দহ শব্দদ্বয়ের সমন্বয়ে এই জেলার নামটির উৎপত্তি।
ব্রিটিশ শাসনের আদিপর্বে মালদহ জেলার কোনো অস্তিত্ব ছিল না। এই জেলার কিয়দংশ পূর্ণিয়া জেলার ও অবশিষ্টাংশ অবিভক্ত দিনাজপুর জেলার অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৮৫৯ সাল থেকে ১৮৭৬ সাল পর্যন্ত মালদহ জেলা রাজশাহী বিভাগেরঅন্তর্গত ছিল। ১৮৭৬ সালে এই জেলা ভাগলপুর বিভাগেরঅন্তর্ভুক্ত হয় এবং ১৯০০ সালে পুনরায় রাজশাহী বিভাগের অন্তর্গত হয়। ১৯৪৭ সালের ১৭ অগস্ট শিবগঞ্জ, নবাবগঞ্জ, ভোলাঘাট, নাচোল ও গোমস্তাপুর থানা বাদে মালদহ জেলা ভারত অধিরাজ্যেরঅন্তর্ভুক্ত হয়। বর্তমানে এটি জলপাইগুড়ি বিভাগের অন্তর্গত।

এটিও পড়ুন – বাংলায় কম্পিউটার শিক্ষার এক মাত্র বাংলা সাইট কম্পিউটার জগত

মালদহ একটি কৃষিনির্ভর জেলা। বৃহৎ শিল্পে এই জেলা বিশেষ অনুন্নত হলেও এখানকার ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের বিশেষ খ্যাতি রয়েছে। সুলতানি যুগের বিভিন্ন স্থাপত্য নিদর্শনকে কেন্দ্র করে একটি উল্লেখযোগ্য পর্যটন শিল্পও এখানে বিকাশলাভ করেছে। মালদহের গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় উত্তরবঙ্গের দ্বিতীয় সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়।

Ø  জেলার আয়তন: ৩৪৫৫.৬৬ বর্গ কিমি
Ø  মোট জনসংখ্যা (২০০১): ৩,২৯০,১৬০
Ø  ধর্ম:মুসলিম ৫২.৭২%, হিন্দু ৪৭.২৮%, অন্যান্য ১%।

 

malda map

 

মালদহ কয়েকটি স্থানঃ
মালদা জাদুঘর (Malda Museum)
রামকেলি (Ramkeli)
(মালদার দক্ষিন থেকে ১৪ কিমি দূরে অবস্থিত)
মালদার গৌড়ের নিকটে ছোট গ্রাম রামকেলি। রামকেলি অস্থায়ী বাসস্থান ছিল শ্রী চৈতন্য। বাংলার বিখ্যাত ধর্মীয় গুরু। কিছু দিনের জন্য ছিলেন বৃন্দাবন। সেখানে তমাল ও কদম্ব গাছ রয়েছে। প্রতি বছর জোষ্ঠের সংক্রান্তিতে শ্রী চৈতন্য স্মরণে এখানে মেলা অনুষ্ঠিত হয়। এক সপ্তাহব্যাপী মেলায় আলোময় হয়ে থাকে স্থানটি।
 
গৌড় (Gour)
(দক্ষিন মালদা থেকে ১৬ কিমি দূরে বাংলাদেশ সীমানার কাছে অবস্থিত। সপ্তম শতকের রাজা শ্বশাঙ্ক-এর রাজধানী ছিল গৌড় যা প্রাচীণ বাংলায় কয়েক শতাব্দী ধরে একটি গৌরবময় অধ্যায় হিসেবে  বিবেচিত।)
বারোদুয়ারি/ বড় সোনা মসজিদঃ
রামকেলি থেকে দক্ষিণে অর্ধেক কিমি দূরে রড় সোনা মসজিদ। গৌড়ের স্থাপত্য কির্তী সমুহের মধ্যে এটি বৃহত্তম ইট ও পাথরের তৈরী বিশাল আয়তকার ইমারত। বারো দুয়ারী বা দরজানাম হলেও এখানে এগারোটি দুয়ার রয়েছে। সুলতান আলাউদ্দিন হোসেন শাহ এটির নির্মান কার্য্য শুরু করেছিলেন কিন্তু শেষ করে যেতে পারেননি। পরে পুত্র সুলতান নসরত শাহ ১৫২৬ সালে কাজটি সম্পন্ন করেন। সমস্ত মসজিদের ইমারতটির উচ্চতা ২০ ফুট,  দৈর্ঘ্য ১৬৮ ফুট ও প্রস্থ ৭৬ ফুট ইন্দো-আরবিক চিত্রকলার স্থাপত্য এবং শোভাময় পাথর দিয়ে তৈরী এই বারোদুয়ারী পর্যটকদের আর্কষণ করে।
দাখিল দরওয়াজাঃ
দাখিল দরওয়াজা বা ফটক মুসলীম গৌড়ের স্মৃতিসমুহের মধ্যে চিত্তাকর্ষক প্রবেশদ্বার হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ। ১৪২৫ সালে খুব সম্ভবতঃ সুলতান বারবক শাহ্ স্থাপণাটি তৈরী করেনদরওয়াজাটি ৬০ ফুট উঁচু ও ৭৩ ফুট চওড়া যা ছোট ছোট লাল ইঁট ও পাথর দিয়ে তৈরী। চার স্তম্ভ দ্বারা নির্মিত পাঁচতলা উচু এই ইমারত, যার মধ্য দিয়ে দূর্গের প্রধান প্রবেশদ্বার। স্থানটির দক্ষিণ-পূর্ব কর্ণার বিশিষ্ট পুরোণো দূগূটি রয়েছে যা ৬০ ফুট উচু ধ্বংসাবশেষ দেয়াল দিয়ে ঘেরা।
ফটকের ভিতরের পথটি বেশ চওড়া ফলে সওয়ারী সহ হাতি অনায়াসে ভিতরে প্রবেশ করতে পারত। এই দরজার দুপাশ থেকে তোপধ্বনি করে সুলতান ও উর্ধতন রাজপুরুষদের সম্মান প্রদর্শন করা হত। জন্য দাখিল দরওয়াজাকে  সেলামী দরওয়াজা বলা হয়ে থাকে।
ফিরোজ মিনারঃ
দাখিল দরোয়াজা থেকে এক কিমি ধুরে এই ফিরোজ মিনার। এটি সুলতান সাইফুদ্দিন ফিরোজ শাহ্ ১৪৮৫-৮৯ সালের মধ্যে তৈরী করেন। এটি পাঁচ তলা মিনার যা কুতুব মিনারের অনুরুপ। মিনারটি উচু ২৬ মিটার এবং পরিধি ১৯ মিটার। স্থাপনাটির প্রথম তিন তলা ১২টি ভিন্ন ভিন্নভাবে খিলান করা এবং উপরের দুটি আরো খিলানাকৃতি বিশিষ্ট। ৮৪টি ধাপ অতিক্রম করে স্থাপনাটির শীর্ষ যা চারপাশ ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে এই ধাপগুলো উঠেছে। মিনারের দেয়াল বিভিন্ন শৈল্পিক টেরাকোটায় ভরা যা তঘলিকি চিত্রকলার ভিত্তিতে এই স্থাপত্য নির্মিত। এই মিনারটি পীর আশা মিনার বা চিরাগদানী নামেও পরিচিত।
চামকাট্টি মসজিদঃ
চিকা মসজিদঃ
সুলতান ইউসুফ শাহ্ ১৪৭৫ সালে নির্মাণ করেন এই চিকা মসজিদ। সম্ভবত এখানে অনেক পরিমান চিকা বা বাদুর সমাগমের জন্য এই মসজিদটির এই নাম। এটি এক গম্বুজ ইমারত যা এখন প্রায় ধ্বংসাবশেষ। দেয়ালে সুন্দর খোদাই-করা ভাস্কর্য বিদ্যমান এবং দরজা চৌকাটেহিন্দু আবহে সুন্দর চিত্রিত অঙ্কণ এখনও আংশিক দৃশ্যমান এই মসজিদটিও হিন্দু মন্দিরের সাংষ্কৃতিক আবহ বহন করেছে।
লুকোচুরি গেটঃ
কদমরসুল মসজিদ থেকে দক্ষিণ পূর্বে অবস্থিত লুকোচুরি গেট বা ফটক। ১৬৫৫ খ্রীষ্টাব্দে বাংলার সুবেদার শাহ সুজা গৌড় দুর্গে প্রবেশ করবার জন্য এই দরোয়াজাটি তৈরি করেন। উচ্চতা ৬৫ ফুট ও চওড়া ৪২ ফুট। দুইদিকে প্রহরীদের ঘর ও ওপরে নহবতখানা আছে। এখানে সুলতান তার বেগমের সাথে খেলেছিল (লুকাচুরি) বলেই জয়গাটি এই নামে পরিচিত(কিংবদন্তি থেকে)।
আরেকদল ঐতিহাসিকদের মতে, এটি ১৫২২ সালে আলাউদ্দিন হুসেন শাহ দ্বারা নির্মিত হয়েছিল রাজকীয় এই স্থানের পূর্ব দিকে অবস্থিত এই দুটি দোতলা ফটক যা প্রধান বৈশিষ্ট্য হিসাবে প্রদর্শিত। উদ্ভাবনী স্থাপত্য শৈলী হিসেবে দেখার জন্য একটি আকর্ষণীয় স্থান
কদমরসুল মসজিদঃ
ফিরোজ মিনার থেকে প্রায় অর্ধ কিমি দূরে কদমরসুল মসজিদ। হজরত মহম্মদ(সাঃ) এর পদচিহ্ন স্থাপন করার জন্য এই সৌধটির নাম হয় কদম রসুল।
লুকোচুরি ফটক বা দরোয়াজা দিয়ে গৌড় দুর্গে ঢোকার পর ডানদিকে রয়েছে কদমরসুল সৌধ। এখানে হজরত মহম্মদ(সাঃ) এর পদচিহ্ন রয়েছে, সুদূর আরব থেকে পীর শাহ জালাল তাবরেজী এনেছিলেন পান্ডুয়া-র বড় দরগায়, সেখান থেকে সুলতান আলাউদ্দিন হোসেন শাহ এটিকে নিয়ে আসেন গৌড় দুর্গে। তাঁর পুত্র সুলতান নসরত শাহ ১৫৩০ সালে চার কোণে কষ্ঠি পাথর দ্বরা গঠিত বেদির ওপর পদচিহ্নটি স্থাপন করে তার ওপর কদম রসুল সৌধ নির্মান করেন। বেদীটির উপরে বিভিন্ন শৈল্পিক চিত্র দিয়ে অঙ্কিত।
মসজিদের বিপরীতে স্থাপিত আছে ফাতেহ্ খান সমাধি। যিনি ১৬ শতকে আওরঙ্গজেব এর সেনাবাহিনীর সেপাপতি। এই সমাধিটি হিন্দু শিল্পকলা দিয়ে তৈরী হয়েছে। সামান্য দূরেই তাতিপাড়া মসজিদ, মিশ্রিত শৈল্পিক ট্যারাকোটায় এই মসজিদটি তৈরী।
লোটন মসজিদঃ
কোতোয়ালি দরোয়াজা থেকে ১ কি.মি. উত্তরে রয়েছে এই লোটন মসজিদ। ঐতিহাসিক মসজিদটি ১৪৭৫ সালে সুলতান শামসুদ্দিন ইউসুফ শাহ দ্বারা নির্মিত বলে ধারনা করা হয়। এখানে মসজিদের স্থাপত্য সম্পর্কে এর রাজকীয় দরবারে নাচের মেয়ে নিয়ে একটি কিংবদন্তিআছে। সাক্ষ শিল্পগলো মীনার কারুকার্য যা নীল, সবুজ, হলুদ বেগুনী এবং সাদা রংয়ের জটিল সংমিশ্রণে ইটের আস্তরণের মাঝে কালাই করা হয়েছে যা ভিতরের এবং বাহিরের দেয়ালে এখনও দৃশ্যমানজাঁকজমকপূর্ণ রঙেরছোঁয়ার জন্য এক শৈল্পিক অঙ্কিত মসজিদও বলা যায়। এই মসজিদের আরেকটি আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্যযে ধনুকের ন্যায় বক্র খিলানকরা গুলো অষ্টকোণী স্তম্ভ সাথে রয়েছে।
কোতওয়ালী দরওয়াজাঃ
গুমতি দরওয়াজাঃ
চিকা মসজিদ থেকে উত্তর-পূর্ব দিকে স্থাপিত এই গুমতি দরওয়াজা। গুমতি দরওয়াজা তৈরী করেন আলাউদ্দিন হোসাইন শাহ্। ইট এবং টেরাকোটা দিয়ে এক অপূর্ব উজ্জ্বল রং শিল্পকর্মের মধ্যে ফুটে ওঠে যা এখনও আংশিক দৃশ্যমান খাটি সোনা ব্যবহার করে এই শিল্পকার্য করা হয়েছে। বর্তমানে এটি প্রদর্শনের ক্ষেত্রে জনসাধারনের জন্য বন্ধ করে রাখা হয়েছে।
আদিনা
(মালদা শহর থেকে ১৫ কিমি উত্তরে অবস্থিত)
আদিনা হরিণ প্রজনণ পার্কঃ
আদিনা হরিণ প্রজনণ পার্ক জেলা শহর মালদা থেকে ২১ কিলোমিটার দূরে। পার্কটিতে প্রজনন কেন্দ্র ছাড়াও সেখানে বেশ বাগান আছে এবং বিভিন্ন পাখির সমাবেশ ঘটে সেখানে।
হামামঘরঃ
তুর্কি গোসলখানা (১৭ শতাদ্বী)
পানদাব দালান মিনার (Pandab Dallan Minar)
অ্যাটব্রাট দিঘি (Atbart Dighi):
আদিনা মসজিদঃ
আদিনা মসজিদ মালদহে অবস্থিত। এটি সিরিয়ার শতাব্দীউমাইয়া মসজিদের আদলে তৈরি। এটি তৎকালীন দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম মসজিদ। পুরাতন মালদহ শহর থেকে ২০ কিলমিটার দূরে ৩৪ নং জাতীয় সড়কের পাশে অবস্থিত। এর বিপরীতে আছে আদিনা মৃগদাব। ইলিয়াসশাহী সুলতান সিকেন্দার শাহ ১৩৬৩ সালে তৈরি করান। এই মসজিদ উত্তর-দক্ষিণে ৫২৪ ফুট লম্বা ও ৩২২ ফুট চওড়া। এখানে ৯৮ টি খিলান, ২৬০টি থাম ও ৩৮৭টি গম্বুজ আছে যা এখন অনেকটাই ধ্বংসপ্রাপ্তমেঝে থেকে ৮ ফুট উচুতে বাদশা কি তখত নামে একটি মঞ্চ রয়েছে, যার পিছনের পাথরের জালির আড়ালে সুলতান পরিবারের মহিলারা নামাযে অংশগ্রহন করতেন। এই মসজিদের কিছু উপাদান অমুসলিম শিল্পরীতি যেমন; তোরণ ক্ষোদিত ব্যাসল্ট স্থাপত্য (৮৮ ইট) ও হুবহু ছোট গম্বুজ (৩৭৮)ব্যবহার নেওয়া বলে মনে করা হয়।
সুলতান সিকান্দার শাহের সমাধি
আদিনা মসজিদের পাশেই রয়েছে সুলতান সিকান্দার শাহের সমাধি। এই সৌধটির গঠনে বৌদ্ধ যুগের ছাপ রয়েছে। দেওয়ালে টেরাকোটা ও ইঁটের কারুকাজ , পাথরের নকশা ও সুক্ষ জালির কাজ অতুলনীয়।
পাদুয়া (পান্ডুয়া)
(মালদা থেকে ১৮ কিমি দক্ষিণ দিকে অবস্থিত)
কুতুবশাহী মসজিদঃ
আঞ্চলিক ভাবে কুতুবশাহী মসজিদকে ছোট্ট সোনা মসজিদ বলে। এই মসজিদটি নির্মাণ করেছেন  নূর কুতুব-উল-আলম।  এই ধংষ প্রাপ্ত নির্মানাদির পাশেই তাঁর মাজার এবং সেই সাথে এখানে হযরত শাহ্ জালাল তাবরিজ্বির মাজারও আছে বলে জানা গেছে যা বাড়ি দরগা বলে পরিচিত।
একলাখি সমাধিঃ
ইকলাকি সমাধি পাদুয়ার অন্যতম সুন্দর স্মৃতি স্তম্ভ। এটি বাংলার অন্যতম প্রথম আয়তকার ইষ্টক নির্মিত সমাধি। সেখানে দ্বারপ্রান্তে সাথে ক্ষোদিত আছে গণেশ ।  সোনা মসজিদ থেকে অল্প একটু দূরে রাজা গনেশের ধর্মান্তরিত পুত্র যদু  যিনি পরবর্তী কালে সুলতান জালালুদ্দিন মহম্মদ শাহ নামে পরিচিত হন, নিজের মৃত্যুর আগেই একলাখ টাকা খরচ করে নিজের জন্য এই সমাধি সৌধ নির্মান করেন (১৪১৪ ১৪২৮ খ্রীষ্টাব্দ)। তখনকার দিনে এই সমাধি নির্মানে একলাখ টাকা খরচ হয়েছিল বলে এই সমাধির নাম একলাখি সমাধি। এখানে সুলতানের পত্নী ও পুত্রের সমাধিও আছে। এটির স্থাপত্য অপুর্ব সুন্দর এবং এই সৌধ ২৭ ফুট উঁচু।
জগজ্জীবনপুর (তুলাভিটা)
(মালদা শহর থেকে ৩০ কিমি দূরে দক্ষিণ পূর্ব হাবিবপুর ব্লকের কাছাকাছি অবস্থিত)
তুলাভিটাঃ
মালদা থেকে প্রায় ৪৬ কি.মি. দূরে
(অঞ্চল: বৈদ্যপুর জগজীবনপুর)অবস্থিত। জগজীবনপুরে একটি বৌদ্ধবিহার সম্প্রতি আবিষ্কার হয়েছে। বুলবুল চাঁদি, হাবিবপুর ও বাহাদুরপুর গ্রামের মধ্যদিয়ে চলে যাওয়া পাকা সড়ক দিয়ে যাওয়া যায়। বাংলাদেশের রাজশাহী জেলার সীমান্তের কাছেই এর অবস্থান। স্থানটি বেশ কয়েকটি জলাশয় ও ধানক্ষেত দিয়ে ভরা।
এটি পাল যুগের মহেন্দ্র দেব পালের আমলের (যিনি সম্ভবত সপ্তম –অষ্টম সালে এখানে রাজত্ব করেছেন)। মহেন্দ্র দেব পাল একটি তাম্রশাসণের মাধ্যমে এই জায়গাটিকে  বৌদ্ধদের দান করেন এবং সেখানে একটি বৌদ্ধবিহার তৈরী হয়
হাল আমলে সেইতাম্রশাষণ উদ্ধার হয়েছে। এটি পালি ভাষায় তামার প্লেটের উপর লেখাওজন ১১ কে জি ৮০০ গ্রাম, আনুমানিক ১৮ ইঞ্চি লম্বা ও ২২ ইঞ্চি চওড়া।
শুধু তুলা থেকেই ২৫০টি ফলক উদ্ধার হয়। লাল ফলকগুলো অসামান্য মসৃণ, কংকরহীন মাটি দিয়ে তৈরী এবং তার সাথে মিশানো ছিল ঔজ্জ্বল্য বর্ধক বস্তু। এর পরিমাপ ৩১×২৩×৬ সেমি থেকে ২৬×২৫×৫ সেমি। মাটির ফলক ছাড়াও শতাধিক সিল ও সিলিং পাওয়া গেছে। নবম শতাদ্বীর পূর্বভারতীয় লিপিতে লেখা সিলটিতে আছে যে; ‘শ্রী বজ্রদেব নন্দদীর্ঘি বিহরীয় আর্য ভিক্ষু সংঘ’। উদ্ধার হওয়া বিভিন্ন ধরনের পোড়ামাটির মূর্তি ও টেরাকোটার ফলক যার কিছু মালদা মিউজিয়ামে ও কিছু কলকাতার প্রত্নতাত্বীক মিউজিয়ামে রাখা আছে।
তাম্রশাসনটিতে নতুন এক পাল শাসকের পরিচয় প্রকাশ পায়। যিনি দেবপালের পুত্র ও উত্তরসূরি হিসেবে মহারাজাধিরাজ উপাধি প্রাপ্ত। তার নাম মহেন্দ্র দেব পালতাম্রশাসনটি সপ্তম বর্ষে অর্থাৎ ৮৫৪ সালে পুন্ড্রবর্ধণ ভুক্তির ‘কুদ্দাল খাতক’- এর ‘জয়স্কন্ধবার’ থেকে প্রকাশিত। পাল শাসনাধিন ‘নন্দদীর্ঘিকা উদরঙ্গ’-এর মহাসেনাপতি ‘বজ্রদেব’ এই বৌদ্ধবিহার নির্মাণের প্রষ্ঠপোষকতা করেন।
[তথ্য সুত্র- wikipedia]

This Post Has One Comment

Leave a Reply