You are currently viewing শিবরাত্রি ব্রতকথা – শিব রাত্রি ব্রত ইতিহাস ও পূজার মন্ত্র

শিবরাত্রি ব্রতকথা – শিব রাত্রি ব্রত ইতিহাস ও পূজার মন্ত্র

এই পোষ্টে শিবরাত্রি ব্রতকথা – শিব রাত্রি ব্রত ইতিহাস ও পূজার মন্ত্র শেয়ার করা হল। আপনারা যারা শিবরাত্রি ব্রতকথা – শিব রাত্রি ব্রত ইতিহাস ও পূজার মন্ত্র নিয়ে লেখা খুঁজছেন তাদের জন্য এই পোষ্ট।

ব্রতের নিয়মঃ
শিবরাত্রির আগের দিন হবিষ্যান্ন বা নিরাময় আহার করতে হয়। রাতে বিছানায় না শুয়ে  খড় বা কম্বলে শুতে হয়। ব্রতের দিন উপবাসী থেকে গঙ্গামাটি দিয়ে চারটি শিব গড়ে চার প্রহরে একটি করে শিবের পুজা করতে হয়।  প্রতিষ্ঠিত শিব থাকলে তাতেই পুজা করতে হয় চার প্রহরে চার বার। প্রথম প্রহরে দুগ্ধ দ্বারা, দ্বিতীয় প্রহরে দধি দিয়ে, তৃতীয় প্রহরে ঘৃত দিয়ে ও চতুর্থ প্রহরে মধু দিয়ে স্নান করাতে হয়। সেদিন সারারাত্রি জাগরণ করে পরদিন ব্রতকথা শুনে, ব্রাহ্মণ ভোজন করিয়ে ও সাধ্যমত দক্ষিণা দান করে পারণ করতে হয়।
ব্রতের উপকরণঃ 
গঙ্গা মাটি , বিল্মপত্র , গঙ্গা জল, ফুল, দুগ্ধ, ঘৃত, দধি, মধু ও কলা।

এটিও পড়ুন – শারদীয় দুর্গা পূজার SMS , দুর্গা পূজার সেরা SMS

ব্রতের ফলঃ- 

যজ্ঞের মধ্যে যেমন অশ্বমেধ যজ্ঞ , তীর্থের মধ্যে যেমন যেমন গঙ্গা , তেমনি ব্রতের মধ্যে শ্রেষ্ঠ ব্রত হল শিব চতুর্দশী ব্রত। শিব চতুর্দশী ব্রত পালন করলে ধর্ম, অর্থ , কাম , মোক্ষ চতুর্বিধ ফল লাভ হয়ে থাকে। এই ব্রত পালণের মন্ত্র-

সংসার ক্লেশদগ্ধস্য  ব্রতেনানেন শঙ্কর। প্রসীদ, সুমুখো নাথ জ্ঞানদৃষ্টিপ্রদ ভব।।

মহাশিবরাত্রি ব্রতকথা

শিবমহাপুরাণ অনুসারে, বহুকাল আগে বারাণসী তথা কাশীধামে এক নিষ্ঠুর ব্যাধ বাস করত। সে দিনরাত শুধু  জীবহত্যা করে বেড়াত। একদিন ব্যাধ শিকার করতে গিয়ে , অনেক পশু পাখি শিকার করে সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসতেই বাড়ির দিকে রওনা হল। কিছুদূর আসতেই রাত্রি হয়ে গেল। ফলে সে জঙ্গলে পথ হারিয়ে রাতে হীংস্র জন্তুর ভয়ে এক গাছের উপর আশ্রয় নেয় ।

ব্যাধ যে গাছে আশ্রয় নিয়েছিল, সেই গাছটি ছিল বেলগাছ। আর সেই গাছের নিচে ছিল শিবলিঙ্গ । ব্যাধ গাছে নড়ে-চড়ে বসার সময় শিশির জলে ভেজা একটি একটি বেলপাতা খসে পড়লো ঐ শিবলিঙ্গের মাথার উপর। সেদিন ছিল শিবচতুর্দশী অর্থাৎ মহাশিবরাত্রি। আর ব্যাধও ছিল উপবাসী। তার ফেলা বেলপাতাগুলো শিবলিঙ্গের মাথায় পড়ে এর ফলে তার শিবচতুর্দশী ব্রতের ফল লাভ হয় তার অজান্তেই। পরদিন ব্যাধ সকালে বাড়ি ফিরে এলো। সবাই তো তার জন্য ভাবছিল। ব্যাধ ফিরে আসতে তাকে তার বৌ খেতে দিল। এমন সময় একজন অতিথি বাড়িতে এলো। ব্যাধ কি ভেবে তার নিজের খাবারগুলি অতিথিকে দিল । এতে তার ব্রতের পারণ ফল লাভ হলো।

এর কিছুদিন পরে সেই ব্যাধ মারা গেলে।  যমদূতরা তাকে নিতে আসে, এমন সময় সেখানে এলো শিবের দুতেরা। দুই দলে যুদ্ধ বেধে গেল, যম দুতেরা যুদ্ধে হেরে গেল। শিবদূতরা ব্যাধকে কৈলাসে নিয়ে এলো। যমদূতেরাও তার পিছনে পিছনে ধাওয়া করলো।
কৈলাসের দ্বারে নন্দী পাহারায় ছিল, সে ব্যাধের শিব রাত্রির কথা বললো, তাই শুনে যমদূতেরা গিয়ে যমকে সব কথা বললে। যমরাজ শুনে বললেন – হ্যাঁ, যে শিব বা বিষ্ণুর ভক্ত কিংবা যে  শিবচতুর্দশী ব্রত পালন করে আর যে বারানসী ধামে মরে, তার উপর যমের কোনো অধিকার থাকেনা। সে মুক্তিলাভ করে। এইভাবে মর্ত্যলোকে শিবচতুর্দশী ব্রতের প্রচার ঘটে।

এটিও পড়ুন – হোলি বা দোল উৎসব এর ইতিহাস

(সাধারণ শিবলিঙ্গে দশোপচার পূজার মন্ত্র)
ওঁ নমো শিবায় এতৎ পাদ্যং শিবায় নমঃ। (সামান্যার্ঘ্য জল একটু দিন)
ওঁ নমো শিবায় এষঃ অর্ঘ্যঃ শিবায় নমঃ। (আতপচাল ও দূর্বা একটি সচন্দন বেলপাতায় করে ফুল সহ দিন)
ওঁ নমো শিবায় ইদমাচমনীয়ং শিবায় নমঃ। (সামান্যার্ঘ্য জল একটু দিন)
ওঁ নমো শিবায় ইদং স্নানীয়ং শিবায় নমঃ। (সামান্যার্ঘ্য জল একটু দিন)
ওঁ নমো শিবায় এষ গন্ধঃ শিবায় নমঃ। (চন্দনের ফোঁটা দিন)
ওঁ নমো শিবায় ইদং সচন্দনপুষ্পং শিবায় নমঃ। (একটি চন্দনমাখানো ফুল দিন)
ওঁ নমো শিবায় ইদং সচন্দনবিল্বপত্রং শিবায় নমঃ। (একটি চন্দনমাখানো বেলপাতা দিন)
ওঁ নমো শিবায় এষ ধূপঃ শিবায় নমঃ। (ধূপটি শিবের সামনে তিনবার ঘুরিয়ে দেবতার বাঁদিকে, অর্থাৎ নিজের ডানদিকে রাখুন)
ওঁ নমো শিবায় এষ দীপঃ শিবায় নমঃ। (প্রদীপটি শিবের সামনে তিনবার ঘুরিয়ে দেবতার ডানদিকে, অর্থাৎ নিজের বাঁদিকে রাখুন)
ওঁ নমো শিবায় ইদং সোপকরণনৈবেদ্যং শিবায় নিবেদয়ামি।
(নৈবেদ্যের উপর অল্প সামান্যার্ঘ্য জল ছিটিয়ে দিন)
ওঁ নমো শিবায় ইদং পানার্থোদকং শিবায় নমঃ।
(পানীয় জলের উপর অল্প সামান্যার্ঘ্য জল ছিটিয়ে দিন)
ওঁ নমো শিবায় ইদং পুনরাচমনীয়ং শিবায় নমঃ।
(সামান্যার্ঘ্য জল একটু দিন)
ওঁ নমো শিবায় ইদং তাম্বুলং শিবায় নমঃ। (একটি পান দিন, অভাবে সামান্যার্ঘ্য জল একটু দিন।)
ওঁ নমো শিবায় ইদং মাল্যং শিবায় নমঃ। (মালা থাকলে মালাটি পরিয়ে দিন)
(বাণেশ্বর শিবলিঙ্গে দশোপচার পূজার মন্ত্র)

This Post Has One Comment

Leave a Reply