প্রশ্নঃ- ধর্ম কি সমাজের সংহতি সৃষ্টি করে, না বিচ্ছেদ করার শক্তি?
উত্তর : ধর্ম বিচ্ছেদ করার শক্তি নয়, ধর্ম হল সমাজের ঐক্য-বিধায়ক শক্তি ধর্ম মানুষে মানুষের পারস্পরিক বন্ধন ও ঐক্যকে শক্তিশালী করে তােলে। প্রকৃত ধর্ম বােধই মানুষকে পরস্পরের সাথে প্রেম, মৈত্রী ও ভালবাসার সুমধুর বন্ধনে আবদ্ধ করে। বিভিন্ন ধর্মের বহ্যিক প্রকাশভঙ্গীর নানা পার্থক্য থাকলেও সকল ধর্মের মূল লক্ষ্য হল পরম সত্তার উপলব্ধি।
প্রশ্নঃ- প্রথা ও আইন কি অভিন্ন?
উত্তর : প্রথা ও আইন এক নয়। প্রথা ও আইন উভয়েই সমাজ স্বীকৃত ও সামাজিক নিয়ন্ত্রনের হাতিয়ার হলেও প্রথা হল অ-বিধিবদ্ধ নিয়ফ্রেনের মাধ্যম। প্রথা হল অলিখিত আইনকানুন, বা আচার অনুষ্ঠান। কিন্তু আইন হল প্রথার বা আচারের লিখিত রূপ। সামাজিক প্রগতির স্বার্থে অনেক সময় আইন সামাজিক প্রথাকে নিয়ন করে থাকে।
প্রশ্নঃ ধর্মীয় রীতি কি?
উত্তর : ধর্ম বলতে সাধারণত আমরা বুঝি এক বা একাধিক অতিপ্রাকৃত শক্তি প্রতি মানুষের বিশ্বাস এবং সেই বিশ্বাসকে কেন্দ্র করেই সে শক্তিলাভ করে এবং সেই অতিপ্রাকৃত শক্তিকে নিজের করে পাবার জন্য পূজা, আরাধনা ইত্যাদি করে। সমাজবিজ্ঞানী ক্লেকমার ও গিলিনের মতে ধর্ম যতখানি না ব্যক্তিগত তার চেয়ে বেশী সামাজিক। যথার্থ ধর্মাভাব প্রচারের মাধ্যমেই সামাজিক ঐক্য প্রতিষ্ঠার কাজটি সহজতর হয়ে থাকে।
প্রশ্নঃ-নৈতিক বিধি বলতে কি বােব ?
উত্তর : নৈতিক বিধি অনুসারেই আমরা কোন কোন কাজকে ভাল আবার কোন কোন কাজকে মন্দ বলি। নৈতিক বিধি ব্যক্তিভেদে ভিন্ন ভিন্ন হয় তাই এটি সামাজিক বিধির অন্তর্গত নয়। এই বিধি নৈতিক জীবনকে নিয়ন করে।
প্রশ্নঃ আইনের সঙ্গে প্রথার সংঘাতের কারণ কি?
উত্তরঃ প্রথা হল অলিখিত আইন বা আচার অনুষ্ঠান, আর আইন হল প্রথার লিখিত রূপ। কিন্তু স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি নিজেদের স্বার্থে প্রথাবিরােধী কিছু আইন রচনা করতে চাপ দেয় যাতে অদের গােষ্ঠির স্বার্থ সুরক্ষিত থাকে। তাছাড়া রাজনৈতিক কারণে বৃহত্তর গােষ্ঠির স্বার্থে অবহেলিত হয়ে আইন রচিত হয়। কিন্তু বলপ্রয়ােগের মাধ্যমে সেই আইন কেশীদিন চলে না। অন্তরের আনুগত্যে না পেলে আইন বেশীদিন কার্যকরী হয় না।
প্রশ্নঃ-সংস্কৃতির বৈশিষ্ট কি কি?
উত্তরঃ সংস্কৃতির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল মানবজীবনের পরিপূর্ণ বিকাশ সাধন করা। মানুষের সামাজিক, আধ্যাত্মিক, দৈহিক, মানসিক ও নৈতিক জীবনকে উন্নতি বা অগ্রগতির পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া:সংস্কৃতি হল সত্য, শিব ও সুন্দরের উপলব্ধি, সংস্কৃতিই মানব জীবনকে কল্যাণময় ও আনন্দপূর্ণ করে গড়ে তােলে।
প্রশ্নঃ-কৃষ্টি ও সভ্যতা কি এক ?
উত্তরঃ সভ্যতা কৃষ্টি বা সংস্কৃতির পরিচায়ক। ব্যাপক অর্থে সভ্যতা ও সংস্কৃতির মধ্যে কোন পার্থক্য নেই, সভ্যতা সংস্কৃতির অন্তর্ভুক্ত। আর সংকীর্ণ অর্থে সভ্যতা ও সংস্কৃতি এক নয়। সভ্যতা হল বাইরের আর সংস্কৃতি হল ভেতরের।
প্রশ্নঃ- সংস্কৃতি ও সভ্যতার মধ্যে পার্থক্য কি? অথবা, সভ্যতা ও কৃষ্টি কি অভিন্ন?
উত্তরঃ (১) সভ্যতা হল যান্ত্রিক ও বাহ্যিক উন্নয়ন, আর সংস্কৃতি হল আঙ্গিক ও আভ্যন্তরীণ উন্নয়ন।
(২) সভ্যতার অবদান সম্পর্কে জ্ঞানলাভ করা যতটা সহজ সংস্কৃতির অবদানকে উপলব্ধি করা ততটা সহজ নয়। এর জন্য যথেষ্ট শিক্ষা-দীক্ষার প্রয়ােজন।
(৩) সভ্যতার উন্নতি বা অগ্রগতি যতটা দ্রুত ঘটে সংস্কৃতির উন্নতি ততটা দ্রুত হয় না।
(৪) সংস্কৃতির প্রধান উদ্দেশ্য হল কর্ম আর সভ্যতার প্রধান উদ্দেশ্য হল কর্মের ফলাফল।
(৫) আমাদের চিন্তায়, কর্মে, ধর্মে, নীতিবােধে, আমােদে-প্রমােদে সংস্কৃতি প্রকাশিত হয় সভ্যতা প্রকাশিত হয় আমাদের রাজনৈতিক-সামাজিক-অর্থনৈতিক ব্যবস্থায়, পেশা-সংক্রান্ত দক্ষতায়, বিজ্ঞানের নিত্য নতুন আবিস্কার ইত্যাদিতে।
প্রশ্নঃ সভ্যতা বলতে কি বােঝ? অথবা, সভ্যতার লক্ষণ কি কি?
উত্তরঃ আমাদের বাহ্যিক আচরণের প্রকাশ ও উন্নয়ন বা অগ্রগতি হল সভ্যতা। আমাদের রাজনৈতিক-সামাজিক-অর্থনৈতিক ব্যবস্থায়, পেশাসংক্রান্ত দক্ষতায়, বিজ্ঞানের নিত্য নতুন আবিস্কার ইত্যাদির মাধ্যমে সভ্যতা প্রকাশিত হয়। এক কথায় মানব সমাজের যে স্তরে রাষ্ট্র ও শহরের মানুষের কর্মকুশলতা দেখা যায় তার সমষ্টি হল সভ্যতা।
প্রশ্নঃ- কৃষ্টি কি অর্জিত না সহজাত १
উত্তর : কৃষ্টি অর্জিত, সহজাত নয়। সমাজস্থ মানুষের অর্জিত জ্ঞান, বিশ্বাস, নীতি-নিয়ম প্রভৃতির জটিল মাবেশ হ’ল সংস্কৃতি বা কৃষ্টি।
প্রশ্নঃ গণতন্ত্র বলতে কি বােঝ?
উত্তরঃ আব্রাহাম লিনে গণতন্ত্রের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলেছেন,”Democracy is a government of the people, by the people and for the people.” স্বাধীনতা ও সম সুযােগ’ নীতির উপর প্রতিষ্ঠিত জীবনযাপনের ধারাই হল গণতন্ত্র। স্বাধীনতা, ন্যায়বিচার, সমানাধিকার ও সৌহার্দ্যের মধ্যেই গণতন্ত্রের প্রকৃত অর্থ নিহিত রয়েছে। গণতন্ত্র বলতে একটি বিশেষ সমাজব্যবস্থা, রাষ্ট্রব্যবস্থা, শাসনব্যবস্থা ও অর্থব্যবস্থাকে বােঝায় যেখানে যাবতীয় সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে জনগণের সম্মতিকে প্রাধান্য দেওয়া হয়।
প্রশ্নঃ- সমাজ দর্শনের কাজ কি ?
উত্তর : সমাজ দর্শনের কাজ হল সামাজিক ঘটনার অর্থ, তাৎপর্য ও মুল্য নিরূপন করা।
প্রশ্নঃ- সমাজ বলতে কি বােঝায় ?
উত্তর : সমাজ হল একটি গােষ্ঠি যেখানে মানুষ কোন উদ্দেশ্য সাধনের জন্য একসঙ্গে মিলিত হয়ে কাজ করে।
প্রশ্নঃ- সমষ্টিগত মানসিকতা কাকে বলে ।
উত্তরঃ যুগপৎ একতাবােধ ও স্বাতন্ত্যবােধ এবং একই অঞ্চলের সহিত তাদের যে যােগাযােগ ব যােগসূত্র তার ভিত্তিতে একটি বিশেষ মনােভাবের সৃষ্টি হয় যাকে বলা যায় সমষ্টিগত মানসিকতা।
প্রশ্ন- সামাজিক অনুষ্ঠান (প্রতিষ্ঠান) কাকে বলে ?
উত্তর: সামাজিক প্রতিষ্ঠান হল সামাজিক কাঠামাে এবং যন্ত্র যার মাধ্যমে জনসমাজ মানুষের প্রয়ােজন মেটাবার জন্য বিভিন্ন ধরনের কার্যকলাপ, সংগঠন পরিচালনা ও সম্পাদনা করে।
ট্যাগঃ সমাজ ও রাষ্ট্রনৈতিক, ২০০+ সমাজ ও রাষ্ট্রনৈতিক প্রশ্ন উত্তর, Download সমাজ ও রাষ্ট্রনৈতিক, PDF সমাজ ও রাষ্ট্রনৈতিক, জেনে নিন সমাজ ও রাষ্ট্রনৈতিক সম্পর্কিত তথ্য, ফ্রী সমাজ ও রাষ্ট্রনৈতিক প্রশ্ন উত্তর।