সমাজ ও রাষ্ট্রনৈতিক দর্শন সম্পর্কিত 200 প্রশ্ন উত্তর

প্রশ্নঃ- সমিতির সংজ্ঞা কি ?

উত্তর : যখন কিছু সংখ্যক মানুষ একই উদ্দেশ্যে বা একই স্বার্থ সিদ্ধির জন্য সংগঠিত হয় এবং একটি নির্ধারিত কর্মপন্থা অবলম্বন করে তখন তাকে সমিতি বলা যায়।

প্রশ্নঃ- প্রাথমিক গােষ্ঠি কাকে বলে ?

উত্তরঃ প্রাথমিক গােষ্ঠি হল স্বাভাবিক গােষ্ঠি। এখানে মানুষের মধ্যে আছে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। প্রাথমিক গােষ্ঠির মধ্যে আন্তরিকতা যথেষ্ট পরিমণে দেখা যায়। যেমন-ফুটবল ক্লাব, পরিবার প্রভৃতি।

প্রশ্নঃ-মাধ্যমিক গােষ্ঠি কাকে বলে ?

উত্তর: মাধ্যমিক গােষ্ঠির ব্যক্তিদের সম্পর্ক মুখখামুখী নয়, বরং নৈর্ব্যক্তিক, পরােক্ষ এবং বহ্যিক। মাধ্যমিক গােষ্ঠির উদাহরণ হল প্রাদেশিক শিক্ষক সমিতি।

প্রশ্নঃ অর্ন্তবর্তী গােষ্ঠি কাকে বলে ?

উত্তর: প্রাথমিক ও মাধ্যমিক গােষ্ঠির মধ্যবর্তী গােষ্ঠি হল অন্তর্বর্তী গােষ্ঠি, যার ব্যক্তিদের মধ্যে প্রত্যক্ষ সম্পর্ক আছে। কিন্তু এই গােষ্ঠির ক্ষেত্রে কোন ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক নেই।

প্রশ্নঃ- সংঘ বলতে কি বােঝ ?

উত্তর : জনসাধারণের গােষ্ঠিকে সংঘ বলে। সংঘের অন্তর্ভুক্ত সদস্যরা কোন উদ্দেশ্য সাধনের নিমিত্ত একত্রিত হয়। এজন্য কোন নীতি সামনে রেখে এরা একত্রে কাজ করে। যেমন-পরিবার।

প্রশ্নঃ- কত প্রকার সামাজিক অনুষ্ঠান-প্রতিষ্ঠান আছে ?

উত্তর : আট প্রকার। যথা (১) পারিবারিক, (২) শিক্ষামূলক, (৩) অর্থনৈতিক, (৪) শিল্পসম্পর্কীয়, (৫) সাংস্কৃতিক, (৬) ধর্মমূলক, (१) আমােদ-প্রমােদ সম্পৰ্কীয় এবং (৮) কন্য অনুষ্ঠান।

এটিও পড়ুন –

প্রশ্নঃ- শ্রেণীর দুটি বৈশিষ্ট্য কি কি ?

উত্তর ঃ শ্রেণীর প্রথম বৈশিষ্ট্য, এটি একটি বিশেষ মনুষ্যগােষ্ঠি, যা অন্যান্য গােষ্ঠি থেকে বিভিন্ন সমাজের স্বীকৃতি পেয়েছে। দ্বিতীয়ত, শ্রেণীচেতনা বা Class consciousness যা স্তর বিন্যাসের মাধ্যমে একটি সংহতরূপ ধারণ করেছে।

প্রশ্নঃ মার্কসের শ্রেণী চেতনার অর্থ কি ?

উত্তরঃ মার্কসের শ্রেণী চেতনার অর্থ হল, শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত মানুষ যে একই শ্রেণীর সামিল সেই চেতনা বা ওয়ান।

প্রশ্নঃ- শ্রেণী সংহতির পরিচায়ক কি ?

উত্তর : শ্রমিকদের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক লক্ষ্য সাধনের জন্য যে একতা সেটাই অদের সংহতির পরিচায়ক।

প্রশ্নঃ- জাতি বলতে কি বােঝায় ?

উত্তর : জাতি এমন একটি আশ্মবৈবাহিক গােষ্ঠি বা গােষ্ঠি সমষ্টি যাদের পদবী এক যা বংশানুক্রমিক, যা তার অন্তর্ভুক্ত ব্যক্তিদের সামাজিক আদান-প্রদান সম্পর্কে কয়েকটি বিশেষ বাধানিষেধ আরােপ করে, যা একটি চিরাচরিত বৃত্তি অনুসরণ অথবা একটি উৎপত্তির সূত্র দাবী করে এবং যা সাধারণত একটি সমজাতীয় সমষ্টিরূপে গণ্য হয়।

প্রশ্নঃ- দ্বিজ বলতে কি বােঝায় ?

উত্তরঃ ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্যকে দ্বিজ বলা হয়। এদের উপনয়ন হয়। দ্বিজত্বে বরণ দশবিধ সংস্কারের অন্যতম। এরা উপবীত ধারণের অধিকারী।

প্রশ্নঃ- জাতিভেদ বলতে কি বােঝায় ?

উত্তর : ভারতের জাতিভেদ প্রথা নানাবিধ স্তরের সামাজিক সংমিশ্রণের ফল। এই প্রথা শুধু প্রাক প্রাবিড়ীয় ও আর্যসভ্যতার সংমিশ্রণের ফলে হয়নি, উত্তর কালের বহু সম্প্রদায়ের ও উপজাতির সংমিশ্রণে এই প্রথা শক্তি ও প্রসার লাভ করেছে।

প্রশ্নঃ- সমপাওক্তেয়তার অর্থ কি ?

উত্তর : সমপাঙক্তেয়তার অর্থ হল কোন নিম্ন-জাতীয় মানুষ উচ্চ জাতির মানুষের সঙ্গে এক পঙক্তিতে বসে আহার করবে না। এই প্রথা বিশেষ করে ব্রাহ্মণ ও বাস্মাণেততর জাতীর প্রতি প্রযােজ্য।

প্রশ্ন: সংস্কৃতি বলতে কি বােঝায় ?

উত্তরঃ সংস্কৃতি দু’টি অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। ব্যাপক অর্থে এবং সঙ্কীর্ণ অর্থে। সঙ্কীর্ণ অর্থে সংস্কৃতি বলতে অর্জিতরুচি ও সভ্যতা বােঝায়। ব্যাপক অর্থে সংস্কৃতি বলতে কোন সমাজের কার্যাবলী, সাহিত্য , দর্শন, সভ্যতা সব কিছুই বােঝায়।

প্রশ্নঃ- সভ্যতা ও সংস্কৃতি কি সমার্থক ?

উত্তর : সভ্যতা ও সংস্কৃতির মধ্যে নানা প্রভেদ আছে। কিন্তু তা হলেও একটির সঙ্গে অপরটির সম্পর্ক খুবই ঘনিষ্ঠ। সভ্যতা ও সংস্কৃতি সমার্থক শব্দ নয় বা এদের মধ্যে কোন বিরােধ নেই। তবে সভ্যতাকে সংস্কৃতির একটি দিক রূপে গণ্য করাই যুক্তিযুক্ত।

প্রশ্নঃ- সাংস্কৃতিক সংঘের বৈশিষ্ট্য কি ?

উত্তরঃ সমাজের সহিত সাংস্কৃতিক সংঘের সভ্যদের মধ্যে যােগাযােগ অপরিহার্য। এক ব্যক্তি একই সঙ্গে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংঘের সভ্য হতে পারে। এখানেই অর্থনৈতিক বা রাজনৈতিক সংঘের সঙ্গে সাংস্কৃতিক সংঘের পার্থক্য। অর্থনৈতিক বা রাজনৈতিক সংঘের একরূপতা ও একমতাবলম্বিতার উপর জোর দেওয়ার অর্থ সংস্কৃতিকে ধ্বংস করা।

প্রশ্নঃ- ধর্ম কাকে বলে ?

উত্তর ব্যক্তির জীবনে এবং জাতির জীবনে যা যথার্থ সংহতি আনে তাই ধর্ম। অন্তর ও বাহির মিলে মানুষের জীবনের যে পূর্ণ সামঞ্জস্য তার মধ্যে যা মানুষের জীবনকে ধরে রাখে, সামাজিক জীবনের বৃহত্তম ঐক্যের মধ্যে জীবনকে ধরে রাখে তাই ধর্ম।

প্রশ্নঃ সমাজ জীবনে ধর্মের ভূমিকা কি ?

উত্তরঃ সমাজ-জীবনে ধর্ম নানাভাবে নিজেকে প্রকাশ করে। বিভিন্ন পারিবারিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক অনুষ্ঠান-প্রতিষ্ঠানের উপর ধর্ম তার প্রভাব বিস্তার করে। ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলি সামাজিক মেলামেশার গুরুত্তপূর্ণ কেন্দ্র।

প্রশ্নঃ- প্রত্যক্ষ গণতন্ত্রকে নিয়ন্ত্রন করার পদ্ধতি কি কি ?

উত্তর: (ক) গণ ভােট, (খ) গণ উদ্যোগ, (গ) পদচূতি, (ঘ) প্রতিনিধি প্রত্যাহার প্রভৃতির মাধ্যমে প্রত্যক্ষ গণতান্ত্রিক নিয়ন্ত্রন ব্যবস্থাকে কার্যকর করা হয়।

প্রশ্নঃ- পরােক্ষ বা প্রতিনিধিমূলক গণতন্ত্রের বৈশিষ্ট্যগুলি কি কি? উত্তর : পরােক্ষ বা প্রতিনিধিমূলক গণতন্ত্রের মূল বৈশিষ্ট্যগুলি হল(ক) জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা সরকার গঠন ও পরিচালনা করে, (খ) সার্বজনীন ভােটাধিকারের ভিত্তিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, (গ) জনগণের মঙ্গলার্থে শাসন পরিচালনা করা হয়, (ঘ) রাজনৈতিক ও আইনগত সার্বভৌমমিকতার মধ্যে পার্থক্য করা হয়, (ঙ) দল প্রথার গুরুত্তকে স্বীকার করে এবং (চ) রাষ্ট্রনৈতিক সাম্য প্রতিষ্ঠিত হয়।

প্রশ্নঃ গণতন্ত্রের কয়েকটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ কর।

উত্তরঃ গণতন্ত্রে কয়েকটি বৈশিষ্ট হল—ব্যক্তির প্রতি শ্রদ্ধা, প্রত্যেক ব্যক্তির সমান সুযাগ ও অধিকার, সহনশীলতা, সহযােগিতামূলক মনােভাব, স্বতঃস্ফূর্ততা, পরিবর্তনশীলতা, সৌহার্দ্যের নীতির উপর শুরুত্ত দান ইত্যাদি।

প্রশ্ন প্রত্যক্ষ গণতন্ত্র কাকে বলে?

উত্তর : যে গণতন্ত্রে জনসমাজের প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিরা নিয়মিতভাবে নির্দিষ্ট স্থানে মিলিত হয়ে আইন প্রণয়ন এবং শ্বাসনকার্য পরিচালনার ব্যবস্থা করে তাকে প্রত্যক্ষ গণতন্ত্র (Direct Democracy) বলা হয়। এত্যক্ষ গণতনই প্রকৃত বিশুদ্ধ গণতন্ত্র যা বাস্তবে দেখা যায় না। পরিবর্তে সুইজারল্যাণ্ডের মত গণ-ভোট, গণ-উদ্যোগ প্রভৃতি ব্যবস্থার মাধ্যমে আংশিকভাবে এই গণতন্ত্রের প্রকাশ মক্তব হয়।

প্রশ্নঃ গণতন্ত্রের প্রধান বৈশিষ্ট্য কি কি ?

উত্তর : রাষ্ট্রনৈতিক দিক থেকে গণতন্ত্রের বৈশিষ্ট্যগুলি মােটামুটি এই রকম—সার্বিক ভােষ্ট্রদানের মাধ্যমে পরােক্ষভাবে জনপ্রিয় শাসন, সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসন, দায়িত্বশীল সরকার, মতার পরিবর্তন, স্থানীয় স্বায়ত্বশাসনের মাধ্যমে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ।

প্রশ্নঃ প্রতিনিধিমূলক গণতন্ত্র কি?

উত্তর: যে গণতন্ত্রে জনসাধারণ নির্দিষ্ট সময় তার তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে পরােক্ষভাবে দেশের শাসন কার্য পরিচালনা করে তাকে বলা হয় প্রতিনিধিমূলক গণতন্ত্র। এই শাসনব্যবস্থায় প্রতিনিধিরা তাদের কাবাবলীর জন্য জনসাধারণের কাছে দায়িত্বশীল বানে। এই জন্যই গণতন্ত্রকে দায়িত্বশীল গণতন্ত্র নামেও অভিহিত করা হয়।

প্রশ্নঃ- উদারনৈতিক গণতন্ত্র বলতে কি বােব?

উত্তর : উদারনৈতিক গণতন্ত্র হল উদারনৈতিক দর্শন ও ভাবধারার ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত এক বিশেষ ধরনের রাজনৈতিক অবস্থা। উদারনৈতিক গণতন্ত্রের মূল কথা হল কর্তৃত্ববাদের বিরধিতা এবং বাস্বাধীনতা, চিন্তার স্বাধীনতার প্রতিষ্ঠা। এই গণতন্ত্রে ব্যক্তি মর্যদা, ধর্মের স্বাধীনতা, সামাজিক সমানাধিকার,গণসার্বভৌমত্ব, জাতিগত সাম্য প্রভৃতি বিষয়ের উপর যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হয়। জেমস্ মিল, বেন্থাম প্রভৃতি দার্শনিক এই গণতন্ত্রের বিকাশ সাধন করেন।

প্রশ্নঃ সমাজতান্ত্রিক গণতন্ত্র বলতে কি বােব ?

উত্তরঃ মার্কসীয় দর্শনের উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠা জনসাধারণের ব্যাপক অংশের তথা সাধারণ সর্বহারা মানুষের গণতন্ত্রই হল সমাজতান্ত্রিক গণতন্ত্র। সাম্য, স্বাধীনতা ও মৈত্রী হল এই গণতন্ত্রের মূল নীতি। মার্কসীয় মতে সমাজতান্ত্রিক গণতন্ত্র হল এমন এক সমাজব্যবস্থা যেখানে সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সমতা রক্ষিত হয়। অর্থনৈতিক সাম্যের ভিত্তিতে শােষণ মুক্ত সমাজ ব্যবস্থাই হল সমাজতান্ত্রিক গণতন্ত্র। চীনের শাসনব্যবস্থা সমাজতান্ত্রিক গণতন্ত্রের উপর প্রতিষ্ঠিত।

সোর্স- ইন্টারনেট

ট্যাগঃ সমাজ ও রাষ্ট্রনৈতিক, ২০০+ সমাজ ও রাষ্ট্রনৈতিক প্রশ্ন উত্তর, Download সমাজ ও রাষ্ট্রনৈতিক, PDF সমাজ ও রাষ্ট্রনৈতিক, জেনে নিন সমাজ ও রাষ্ট্রনৈতিক সম্পর্কিত তথ্য, ফ্রী সমাজ ও রাষ্ট্রনৈতিক প্রশ্ন উত্তর।

Leave a Reply