.
প্রশ্নঃ- অনুষঙ্গের নিয়ম কি কি?
উত্তর : আধুনিক মনােবিদ্যায় অনুষঙ্গের নিয়ম হল তিনটি। যথা(১) সান্নিধ্য অনুষঙ্গ নিয়ম, (২) সাদৃশ্য অনুষঙ্গ নিয়ম এবং (৩) বৈপরীত্য অনুষঙ্গ নিয়ম।
প্রশ্নঃ- স্মৃতি প্রখরতার লক্ষণ কি কি?
উত্তর : স্মৃতি প্রখরতার লক্ষণগুলাে হলঃ সহজে শেখা বিষয়বস্তু অনেকদিন মনে রাখা, প্রয়ােজনের সময় শেখা জিনিসটি তাড়াতাড়িও নির্ভুলভাবে মনে করা, যখন যা প্রয়েজন ঠিক তখনই সেটি মনে করতে পারা, অপ্রয়ােজনীয় জিনিস মনে না পড়া। এগুলােকেই উত্তম লক্ষণ বলা যায়।
প্রশ্নঃ-স্মৃতির উন্নতি কি সম্ভব?
উত্তর : মনােবিদ্ জেমস্-এর মতে স্মৃতির উন্নতি সম্ভব নয়। তবে মনােযােগ ও আগ্রহ বৃদ্ধি করলে বিষয়বস্তু সহজে আয়ত্ত করা যায়। মনােবিদ্ স্টাউট প্রভৃতির মতে অনুশীলনের দ্বারা স্মৃতির সামগ্রিক উন্নতি না হলেও বিভিন্ন পদ্ধতির সাহায্যে এর আংশিক উন্নতি সম্ভব। তবে সাধারণভাবে স্মৃতির উন্নতি সম্ভব নয়।
প্রশ্নঃ- বিস্মৃতি কাকে বলে?
উত্তর ঃ স্মৃতির বিপরীত প্রক্রিয়া হল বিস্মৃতি, ভুলে যাওয়াকে বলা হয় বিশ্মৃতি। বিস্মৃতি হল মস্তিস্কে অভিজ্ঞতালব্ধ বিষয়ের সংরক্ষণের অভাব। এটি একটি স্বাভাবিক মানসিক ঘটনা।
প্রশ্নঃ- বিস্মৃতির কারণ কি?
উত্তরঃ বিস্মৃতির বা ভুলে যাওয়ার প্রধান কারণগুলাে হল—শিক্ষণীয় বিষয়বস্তুর প্রকৃতি, আঘাত, নেশাকারক বস্তু গ্রহণ, ঘুমের অভাব, পরিবর্তিত পরিবেশ, অবদমন ও প্রতিরােধ।
প্রশ্নঃ- আমরা ভুলে যেতে চাই বলে কি ভুলে যাই?
উত্তরঃ মনােবি ফ্রয়েডের মতে আমরা ভুলতে চাই বলে ভুলে যাই। ভুলে যাওয়াটা হল একটা ঐচ্ছিক মানসিক প্রক্রিয়া। আমরা বিস্মৃতির বিষটিকে সচেতন মন থেকে সরিয়ে অচেতন মনে অবদমন করি। আমরা যা পছন্দ করি এবং যা ভালবাসি তাই মনে রাখি, আর যা পছন্দ করি না তা ভুলে যাই। যেমন—আমরা আনন্দের কথা মনে রাখি, কিন্তু দুঃখ বা বেদনার কথা ভুলে যেতে চাই।
প্রশ্নঃ- কল্পনা কাকে বলে?
উত্তরঃ অতীতে অভিজ্ঞতার প্রতিরূপগুলােকে নতুন রূপে সাজিয়ে মনের সামনে যখন নতুন কোন মানসচিত্র তুলে ধরা হয় তাকে বলে কল্পনা।
প্রশ্নঃ- কল্পনার সঙ্গে প্রত্যক্ষের সম্পর্ক কি?
উত্তরঃ কল্পনা প্রত্যক্ষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্বন্ধে আবদ্ধ। কেননা অতীতে প্রত্যক্ষ করা বস্তুর প্রতিরূপের সংযােজন, বিয়ােজন, বৃদ্ধি, হ্রাস প্রভৃতি প্রক্রিয়ার সাহায্যেই কল্পনা গড়ে ওঠে।
প্রশ্নঃ- মনােযােগ কাকে বলে?
উত্তরঃ যে নির্বাচনধর্মী মানসিক প্রক্রিয়ার সাহায্যে আমরা অনেকগুলাে বিষয় থেকে কোন একটি বিশেষ বিষয়কে বেছে নিয়ে মন-নিবিষ্ট করি এবং বিষয়টি সম্পর্কে সুস্পষ্ট ও যথার্থ অজ্ঞান অর্জন করতে পারি তাকেই বলা হয় মনােযােগ।
প্রশ্নঃ মনােযােগের নির্ধারকণগুলা কি কি?
উত্তর : মনােযােগের নির্ধরক হল দুটি—একটি হল বাহ্যিক বা বস্তুগত নির্ধারক এবং অপরটি হল আভ্যন্তরীণ বা ব্যক্তিগত নির্ধারক। * প্রশ্নঃ মনােযােগের বিষয়বস্তুর তারতম্য অনুসারে মনােযােগকে ক ভাগে ভাগ করা হয়?
উত্তর : বিষবস্তুর তারতম্য অনুসারে মনােযােগকে দুভাগে ভাগ করা হয়েছে। যথা সংসবদনকেন্দ্রিক ও ভাবকেন্দ্রিক।
প্রশ্নঃ- মনােযােগের হ্রাস বৃদ্ধি কোন যন্ত্রের সাহায্যে লিপিবদ্ধ করা হয়?
উত্তর : কাইমােগ্রাফ নামক যন্ত্রের সাহায্যে মনােযােগের হ্রাসবৃদ্ধি লিপিবদ্ধ করা হয়।
প্রশ্নঃ- বিক্ষেপ কাকে বলে?
উত্তর : যা কিছু মনােযােগ সৃষ্টিতে বাধার সৃষ্টি করে তাই বিক্ষেপ। সাধারণতঃ বাহ্য উদ্দীপকই বিক্ষেপের কারণ হয়ে থাকে ।
প্রশ্নঃ- চেতনার সঙ্গে মনােযােগের সম্পর্ক কি?
উত্তরঃ মনােবিদ্ ওয়ার্ড বলেন-মনােযােগ চেতনার পূর্ববর্তী শর্ত।
প্রশ্নঃ- শিশুর মনােযােগে বিকাশের ভরগুলাে কি কি?
উত্তরঃ শিশুর মনােযােগ তিনটি স্তরের মাধ্যমে বিকাশিত হয়। (১)অনিচ্ছাকৃত মনােযােগের স্তর। (২) ইচ্ছা প্রসূত মনােযােগের স্তর এবং (৩) অভ্যাসমুলক মনােযােগের স্তর।
প্রশ্নঃ আগ্রহ ও মনােযােগের সম্পর্ক কি?
উত্তরঃ মনােবি ম্যাকডুগালের মতে আগ্রহ হল সুপ্ত মনােযােগ এবং মনােযােগ হল আগ্রহের সক্রিয় অবস্থা। আগ্রহ হল ভেতরের আর মনােযােগ হল বাইরের বস্তু। মনােযােগের সবচেয়ে প্রয়ােজনীয় শর্ত হল আগ্রহ। আগ্রহের প্রকৃতির ওপরেই মনােযােগের মাত্রা ও স্থায়িত্ব নির্ভর করে। কাজেই আগ্রহ ও মনােযােগের সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড়।
প্রশ্নঃ কোন্ যন্ত্রের সাহায্যে মনােযােগর পরিসর পরিমাপ করা হয়?
উত্তরঃ মনােযােগের পরিসর পরিমাপক যন্ত্রটির নাম হল Tachistoscope। এই শব্দটি দুটি গ্রীক শব্দের সমম্বয়ে গঠিত। Tachistos -যার অর্থ হল ক্ষিপ্র এবং Scope কথার অর্থ হল দেখা। কাজেই Tachistoscope কথাটির বুৎপত্তিগত অর্থ হল দক্ষিপ্র বা দ্রুত দেখা।
প্রশ্নঃ- প্রক্ষোভ বা আবেগ কাকে বলে?
উত্তরঃ কোন বিশেষ বস্তু বা বিষয়কে কেন্দ্র করে আমাদের মধ্যে যে একজাতীয়ে সহজাত প্রবৃত্তিযুক্ত জটিল অনুভুতির সৃষ্টি হয় এবং আমাদের দেহের বাইরে ও ভিতরে ছুি কিছু পরিবর্তন ঘটিয়ে আমাদের কাজে প্রবৃত্ত করে তাকে প্রক্ষোভ বলে।
প্রশ্ন-আবেগ সম্পর্কে বিভিন্ন তত্ত্বগুলাে কি কি?
উত্তর : আবেগ বা প্রক্ষোভ সম্পর্কে উল্লেখযোগ্য তত্ত্বগুলাে হল প্রবৃত্তি-প্রক্ষোভ তত্ত্ব, জেমস-ল্যাঙ্গ তত্ত্ব এবং ক্যাননবার্ড তত্ত্ব।
প্রশ্ন:- প্রক্ষোভ কয় প্রকার এবং কি কি?
উত্তরঃ মনােবিদ্ ম্যাকডুগাল প্রক্ষোভকে দুটি ভাগে ভাগ করেছেন। একটি হল প্রাথমিক প্রক্ষোভ এবং অন্যটি হল মিশ্র প্রক্ষোভ। সহজাত প্রবৃত্তির সঙ্গে যুক্ত ১৭ টি প্রক্ষোভকে ম্যাডুগাল প্রাথমিক প্রক্ষোভবলে উল্লেখ করেছেন—যেমন—বিরক্তি, ভয়, ক্রোধ, বিস্ময় প্রভৃতি। আবার প্রাথমিক বা মৌলিক আবেগের সমন্বয় বা মিশ্রণে সৃষ্টি প্রক্ষোভকে তিনি মিশ্র প্রক্ষোভ বলেছেন। যেমন কৃতজ্ঞতা, হীনম্মন্যতা প্রভৃতি।
প্রশ্নঃ- আবেগ ও মেজাজ কি এক?
উত্তর: আবেগ ও মেজাজ এক নয়। আবেগ বা প্রক্ষোভ হল সহজাত প্রবৃত্তিমূলক জটিল অনুভূতি। প্রক্ষোভ জাগার ফলে ভেতর ও বাইরে কিছু পরিবর্তন ঘটে যা আমাদের কর্মে প্রবৃত্ত করে। মেজাজ হল প্রক্ষোভের বাস্তবে প্রকাশিত হওয়ার প্রবণতা। প্রক্ষোভের তুলনায় মেজাজ দীর্ঘ স্থয়ী। এ মেজাজের কোন নির্দিষ্ট বস্তু বা বিষয় থাকে না।
প্রশ্নঃ- বিভিন্ন প্রকারের প্রতিরূপ কি কি?
উত্তরঃ প্রতিরূপ দুই প্রকার । স্মৃতি প্রতিরূপ এবং কল্পনা প্রতিরূপ।
এটিও পড়ুন – ধর্মীয় সম্পর্কীয় বিভিন্ন জানা অজানা প্রশ্ন উত্তর
Pingback: উদ্ভিদ জগৎ সম্পর্কিত 500 প্রশ্ন উত্তর - KmdInfo