ভারতীয় সংবিধানের ধারাসমূহ: ভারতের সংবিধান ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের সর্বোচ্চ আইন। এই সংবিধানে সরকারের গঠন, কার্যপদ্ধতি, ক্ষমতা ও কর্তব্য নির্ধারণ; মৌলিক অধিকার, রাষ্ট্রপরিচালনার নির্দেশমূলক নীতি, এবং নাগরিকদের কর্তব্য নির্ধারণের মাধ্যমে দেশের মৌলিক রাজনৈতিক আদর্শের রূপরেখাটি নির্দিষ্ট করা হয়েছে। ১৯৪৯ সালের ২৬ জানুয়ারী গণপরিষদে গৃহীত হওয়ার পর ১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারি থেকে এই সংবিধান কার্যকরী হয়। উল্লেখ্য, ১৯৩০ সালের ২৬ জানুয়ারি জাতীয় কংগ্রেসের ঐতিহাসিক স্বাধীনতা ঘোষণার স্মৃতিতে ২৬ জানুয়ারি তারিখটি সংবিধান প্রবর্তনের জন্য গৃহীত হয়েছিল। সংবিধানে ভারতীয় রাজ্যসংঘকে একটি সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র রূপে ঘোষণা করা হয়েছে; এই দেশের নাগরিকবৃন্দের জন্য ন্যায়বিচার, সাম্য ও স্বাধীনতা সুনিশ্চিত করা হয়েছে এবং জাতীয় সংহতি রক্ষার জন্য নাগরিকদের পরস্পরের মধ্যে ভ্রাতৃভাব জাগরিত করে তোলার জন্য অনুপ্রাণিত করা হয়েছে। “সমাজতান্ত্রিক”, “ধর্মনিরপেক্ষ” ও “সংহতি” এবং সকল নাগরিকের মধ্যে “ভ্রাতৃভাব” – এই শব্দগুলি ১৯৭৬ সালে একটি সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানের সঙ্গে যুক্ত করা হয়।[২] সংবিধান প্রবর্তনের স্মৃতিতে ভারতীয়রা প্রতি বছর ২৬ জানুয়ারি তারিখটি প্রজাতন্ত্র দিবস হিসেবে উদযাপন করেন।[৩] ভারতের সংবিধান বিশ্বের সার্বভৌম রাষ্ট্রগুলির মধ্যে বৃহত্তম[৪] লিখিত সংবিধান। এই সংবিধানে মোট ২৪টি অংশে ৪৪৮টি ধারা, ১২টি তফসিল এবং ১১৩টি সংশোধনী বিদ্যমান।[৫] ভারতের সংবিধানের ইংরেজি সংস্করণে মোট শব্দসংখ্যা ১১৭,৩৬৯। এই সংবিধানের প্রবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে পূর্বপ্রচলিত ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনের অবসান ঘটে। দেশের সর্বোচ্চ আইন হওয়ার দরুন, ভারত সরকার প্রবর্তিত প্রতিটি আইনকে সংবিধান-অনুসারী হতে হয়। সংবিধানের খসড়া কমিটির চেয়ারম্যান ড. ভীমরাও রামজি আম্বেডকর ছিলেন ভারতীয় সংবিধানের প্রধান স্থপতি। সোর্স- উইকিপিডিয়া,
ভারতীয় ইউনিয়ন ও তার ভূখণ্ড (Union and its Territory)
ধারা [Articles]
- ভারতীয় ইউনিয়ন ও ভূখণ্ডগত এলাকা।
- নতুন রাজ্যের সূচনা ও গঠন।
- রাজ্যের সীমানা পরিবর্তন বা ভূখণ্ডগত এলাকার পরিবর্তন ও রাজ্যের নাম পরিবর্তন।
- নতুন রাজ্যের সূচনা, রাজ্যের সীমানার পরিবর্তন ইত্যাদির জন্য সংবিধানের প্রথম ও চতুর্থ তপশীলের সংশোধন জনিত ব্যবস্থা।
নাগরিকতা (Citizenship )
5. ভারতীয় সংবিধান চালু বা কার্যকর হবার সময়ে নাগরিকতা সম্পর্কিত বিষয়।
6. যে সমস্ত ব্যক্তি পাকিস্তান থেকে ভারতে এসেছে, সেই সমস্ত ব্যক্তিদের নাগরিকত্ব অধিকার’ (Rights citizenship) প্রদান
7. যে সমস্ত ভারতীয় পাকিস্তানে বসবাস করছে, তাদের নাগরিকতা জনিত অধিকার প্রদান।
8. যে সমস্ত ভারতীয় বংশােদ্ভূত (NRI) ব্যক্তি ভারতের বাইরে বসবাস করছে, তাদের বিশেষ নাগরিকত্বের অধিক প্রদান।
9. যে সমস্ত ব্যক্তি বিদেশী কোনাে রাষ্ট্রের নাগরিকতা গ্রহণ করেছে তারা ভারতীয় নাগরিক হিসাবে গণ্য হবে না।
10. নাগরিকদের অধিকার সংক্রান্ত বিষয়।
11. পার্লামেন্ট নাগরিকত্ব বিষয়ে আইন প্রণয়নের দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করবে।
মৌলিক অধিকারসমূহ |Fundamental Rights]
12. রাষ্ট্রের সংজ্ঞা ও বর্ণনা।
13. মৌলিক অধিকার গুলোর সাথে সঙ্গতিহীন আইন অথবা মৌলিক অধিকার গুলি খ্ব করে এম বাতিলযােগ্য।
14. সাম্যের অধিকার।
15. জাতি, ধর্ম, বর্ণ, স্ত্রী, পুরুষ, জন্মস্থান ইত্যাদি নির্বিশেষে যে-কোনাে প্রকার বৈষম্যকে নিষিদ্ধকরণ।
16. সরকারী চাকুরীলাভের ক্ষেত্রে সকল নাগরিকদের সমান সুযােগ-সুবিধা প্রদান।
17. অস্পৃশ্যতা নিষিদ্ধকরণ।
18. পদবী গ্রহণ নিষিদ্ধকরণ।
19. i) বাক ও মতামত প্রকাশের অধিকার। (ii) শান্তিপূর্ণভাবে ও নিরস্ত্রভাবে সমবেত হওয়ার অধিকার। (iii) সমিতি বা সংঘ গঠনের অধিকার। (iv] ভারতের সর্বত্র স্বাধীনভাবে চলাফেরার অধিকার। (v) ভারতের ভূ-খণ্ডের যে কোনাে অংশে বসবাস করার অধিকার। (vi) যে কোনাে বৃত্তি অবলম্বন করার, অথবা যে কোনাে উপ জীবিকা, ব্যবসা-বাণিজ্য চালানাের অধিকার।
20. কোনাে অপরাধের জন্য নাগরিককে বিধিবহির্ভূত ও অতিরিক্ত শাস্তি প্রদান করা যাবে না।
21. জীবন ও ব্যক্তিগত স্বাধীনতার সংরক্ষণ। প্রাথমিক শিক্ষাকে মৌলিক অধিকারের স্বীকৃতি প্রদান।
22. গ্রেপ্তার ও আটক রাখার বিরুদ্ধে সংরক্ষণমূলক ব্যবস্থা। কোনাে ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হলে সত্বর তাকে গ্রেপ্তারের কারণ জানাতে হবে।
23. বলপ্রয়ােগের দ্বারা পরিশ্রম করানাে, বেগার খাটানাে নিষিদ্ধকরণ।
24. ১৪ বছরের কম বয়স্ক শিশুদের কলকারখানা, খনি বা অন্য কোনাে বিপজ্জনক কাজে নিযুক্ত করা নিষিদ্ধ।
25. সকল ব্যক্তিই সমানভাবে বিবেকের স্বাধীনতা অনুসারে ধর্ম স্বীকার, ধর্মাচরণ এবং ধর্মপ্রচারের স্বাধীনতা ভােগ করবে।
26. প্রত্যেক ধর্মীয় সম্প্রদায় বা গােষ্ঠী নিজের ধর্মীয় সংগঠন ও কার্যাদি পরিচালনা করতে পারবে।
27. ধর্মীয় কারণে কোনাে ব্যক্তিকে কর দিতে বাধ্য করা যাবে না।
28. শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মীয় শিক্ষার ক্লাসে ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণের বিষয়টি তাদের ইচ্ছাধীন।
29. সংখ্যালঘু শ্রেণির নাগরিকদের স্বার্থ সংরক্ষণ সংক্রান্ত বিষয়সমূহ।
30. সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ভুক্ত ব্যক্তিবর্গ নিজের পছন্দমতাে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন ও পরিচালনা করতে পারবে।
31. ধারাটি বাতিল করা হয়েছে।
32. মৌলিক অধিকারগুলিকে বলবৎ করার জন্য পাঁচটি লেখ বা আদেশ (writs) জারী সংক্রান্ত বিষয়াদি ।
33. সশস্ত্র বাহিনীর মৌলিক অধিকার সমূহ পার্লামেন্ট আইন প্রণয়নের দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে।
34. কোন অঞ্চলে সামরিক আইন বলবৎ থাকাকালীন সময়ে সংশ্লিষ্ট অঞ্লে মৌলিক অধিকারের উপর বিধিনিষেধ আরােপিত হতে পারে।
35. মৌলিক অধিকারগুলিকে রক্ষার্থে প্রয়ােজনীয় আইন প্রণয়ন।।
এটিও পড়ুন – সংবিধানের 6 টি মৌলিক অধিকার