সমাজ ও রাষ্ট্রনৈতিকঃ সামাজিক দর্শন হলো নৈতিক মূল্যবোধ বিবেচনায় সামাজিক আচরন, সমাজ ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানের ব্যাখ্যা ও অধ্যয়ন। সামাজিক দার্শনিকগণ বর্তমানে রাজনৈতিক, আইনগত, নৈতিক ও সংস্কৃতি সংক্রান্ত প্রশ্নগুলো, উপন্যাস তাত্ত্বিক কাঠামো উন্নয়নকে সামাজিক প্রেক্ষাপটে ব্যাখ্যার উপর গুরুত্বারোপ করছেন।
সমাজ ও রাষ্ট্রনৈতিক দর্শন সম্পর্কিত 200 প্রশ্ন উত্তর
প্রশ্নঃ- সমাজ দর্শন কাকে বলে।
উত্তরঃ ব্যক্তি তথা সমাজের দার্শনিক আলােচনাকে কেন্দ্র করে দর্শনের যে বিশেষ শাখাটি গড়ে উঠেছে তাই হল সমাজদর্শন। সাধারণত সামাজদর্শন বলতে আমরা সেই শাস্ত্রকে বুঝে থাকি যে শাস্ত্রে দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গী থেকে ব্যক্তির বিভিন্ন সামাজিক সম্পর্ক, সমাজের উদ্দেশ্য, আদর্শ ও গতি-প্রকৃতির আলােচনা করা হয় এবং মানুষের সামাজিক আচরণের মূল্য বিচার করা হয়।
প্রশ্নঃ- সমাজদর্শনের আলােচ্য বিষয় কি?
উত্তরঃ সমাজদর্শনের পরিধি বা আলােচ্য বিষয় হল – -ব্যক্তি ও সমাজ, ব্যক্তির সামাজিক প্রকৃতি, সামাজিক সম্পর্ক, সামাজিক আদর্শ, ধর্ম, সামাজিক ব্যাধি, বিভিন্ন সামাজিক বিজ্ঞান প্রভৃতি।
প্রশ্নঃ- সম্প্রদায় কাকে বলে?
উত্তরঃ সম্প্রদায় বলতে আমরা এমন এক স্থায়ী সামাজিক গােষ্ঠিকে বুঝে থাকি যার সভ্যরা একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলে বসবাস করে এবং তাদের মধ্যে একটা স্বজাত্যবােধ থাকে অর্থাৎ তারা একইভাবে সামাজিক জীবনযাত্রায় অংশ গ্রহন করে। যেমন গ্রাম্য সম্প্রদায়, শহুরে সম্প্রদায়।
প্রশ্নঃ- সম্প্রদায় ও সংঘ কি ত্বক।
উত্তর : সম্প্রদায় ও সংঘ এক বিষয় নয়। সংঘ হল সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত একটি কৃত্রিম গােষ্ঠি প্রায় স্বতঃস্ফুর্তভাবে গঠিত এই সম্প্রদায় হল সমাজজীবনের কেন্দ্রস্বরূপ। সম্প্রদায়ের ভিত্তি হল দুটি। একটি হল স্থান বা অঞ্চল এবং অপরটি হল সম্প্রদায়গত মনােভাব। একই সম্প্রদায়ভুক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে বিভিন্ন রকম সামাজিক সম্পর্ক থাকে। কিন্তু সংঘের অন্তর্গত ব্যক্তিদের মধ্যে বিভিন্ন রকম সামাজিক সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া যায় না। একটি সম্প্রদায়ের মধ্যে একাধিক সংঘ থাকতে পারে এবং একই ব্যক্তি একাধিক সংঘের সভ্য হতে পারে। সম্প্রদায় সংঘের চেয়ে বেশী ব্যাপক।
প্রশ্নঃ- সম্প্রদায় কয় প্রকার ও কি কি ?
উত্তরঃ সম্প্রদায় দুই প্রকার- ক্ষুদ্র ও বৃহৎ সম্প্রদায়।
প্রশ্নঃ- পদমর্যদার ভিত্তি কি কি ?
উত্তরঃ প্রত্যেকটি সমাজে পদমর্যদার ভিত্তিগুলাে নানারকম হয়ে থাকে। তবে মােটামুটি ভাবে বলা যায় জন্ম, সম্পদ, বৃত্তি, জাতি, রাজনৈতিক শক্তি ইত্যাদি হল পদমর্যদার ভিত্তি।
প্রশ্নঃ- প্রচীন হিন্দু ব্যবস্থায় চারটি বর্ণ কি কি ছিল?
উত্তরঃ প্রচীন হিন্দু ব্যবস্থায় ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য ও শুদ্র এই চারটি বর্ণ ছিল।
প্রশ্ন সম্প্রদায়ের ভিত্তি কি কি?
উত্তর : ম্যাকাইভারের মতে সম্প্রদায়ের ভিত্তি হল দুটি অঞ্চল ও স্বজাত্যবােধ। স্বাজাত্যবােধের আবার তিনটি উপাদান আমরা-মনােভাব, নির্দিষ্ট কর্ম করার মনােভাব ও নির্ভরতার মনােভাব।
প্রশ্নঃ- মঠ বা জেলখানাকে কি সম্প্রদায় বলা যায় ?
উত্তর : এই বিষয়টি নিয়ে দুটি মত আছে প্রথম মত অনুসারে মঠ বা জেলখানাকে সম্প্রদাদ বলা হয়েছে। কেননা সম্প্রদায়ের দুটি ভিত্তি – আঞ্চলিকতা ও স্বাজাত্যবােধ দুটিই এখানে বর্তমান থাকে। মঠ বা জেলানার সদস্যরা একই সঙ্গে একই জায়গায় বাস করার জন্য ওই দুটি ভিত্তিই বর্তমান। তাই এদের সম্প্রদায় বলে মানা ই উচিত।
দ্বিতীয় মত অনুসারে মঠ ও জেলখানার সদস্যরা একই ভূখণ্ডে বাস করলেও সরকারের দ্বারা নিয়ন্ত্রণাধীন। তারা স্বাধীনভাবে জীবন নির্বাহ করতে পারে না। তাই এগুলােকে সম্প্রদায় না বলাই ভাল তবে ম্যাকাইভার এগুলােকে সম্প্রদায় বলেই মেনেছেন।
প্রশ্নঃ সমাজ ও সম্প্রদায়ের পার্থক্য কি?
উত্তর: সমাজ একটি বিমূর্ত ও সমাগ্রিক বিষয়, কিন্তু সম্প্রদায় হল মূর্ত ও সমাজের একটি অংশবিশেষ। সম্প্রদায় সৃষ্টির আনেক আগেই সমাজের সৃষ্টি হয়েছে। সম্প্রদায়ের মধ্যে একটি গভীর একাত্মবােধ থাকে কিন্তু সমাজের মধ্যে তা দেখা যায় না। সমাজের মূল বিষয় হল সামাজিক সম্পর্ক এবং সম্প্রদায়ের প্রধান বিষয় হল একটি জনগােষ্ঠি।
প্রশ্নঃ-সামাজিক প্রতিষ্ঠান কাকে বলে?
উত্তরঃ যে সামাজিক কাঠামোে বা যন্ত্রের সাহায্যে জনসমাজ ব্যক্তির প্রয়ােজন পুরণের জন্য বিভিন্ন প্রকার কর্ম সম্পাদন, পরিচালনা ও সংগঠন করে থাকে, তাকে সামাজিক প্রতিষ্ঠান বলে।
প্রশ্ন:- বিভিন্ন প্রকার সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলাে কি কি?
উত্তরঃপরিবার, বিদ্যালয়, শিল্প-প্রতিষ্ঠান, খেলাধুলার ক্লাব, গীর্জা, মন্দির, মসজিদ, সাংস্কৃতি প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি।
প্রশ্নঃ সংঘের মূল ভিত্তি কি?
উত্তরঃ কোন না কোন রকম স্বার্থবােধ হল সংঘ বা সংস্থার মূল ভিত্তি। একটি বিশেষ কোন উদ্দেশ্য সামনে রেখেই সংঘ সংগঠিত হতে থাকে।
প্রশ্নঃ যে কোন জনসমষ্টিকে কি সংঘ বলা যায়?
উত্তর : না; যে কোন জনসমষ্টিকে সংঘ বলা যায় না। বিশেষ কোন একটি উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই সংঘ সংগঠিত হয়। যদিও কোন বিশেষ উদ্দেশ্য ছাড়াই ব্যক্তি একত্রে একস্থানে সমবেত হতে পারে না; কিন্তু তাই বলে তাকে সংঘ বলা যায় না।
এটিও পড়ুন – দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার সাধারণ জ্ঞান
প্রশ্নঃ বিভিন্ন প্রকার সামাজিক অনুষ্ঠানগুলাে কি কি?
উত্তর :- বিভিন্ন প্রকার সামাজিক অনুষ্ঠানগুলাে হল ঃ (১) গঠনমূলক অনুষ্ঠান যেমন পরিবার, (২) অর্থনৈতিক অনুষ্ঠান যেমন কারখানা, বাজার। ব্যবসা-বাণিজ্য ইত্যাদি, (৩) শাসন বিষয়ক, অনুষ্ঠান যেমন সরকার, (৪) সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, যেমন সঙ্গীত, সাহিত্য, চিত্রকলা, ইত্যাদি, (৫) ধর্মীয় অনুষ্ঠান, (৬) বর্বর অনুষ্ঠান ইত্যাদি।
প্রশ্নঃ- সামাজিক প্রথা কাকে বলে?
উত্তর : সমাজ অনুমােদিত পথে কাজ করাই হল প্রথা। যেমন – খাদ্য গ্রহন, আলাপ- আলােচনা, পরস্পরের সঙ্গে মেলামেশা, আত্মীয় পরিজনের সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ করা, ছেলেমেয়েদের শিক্ষা দেওয়া ইত্যাদি বিষয় হচ্ছে আচার বা প্রথা। * প্রশ্নঃ- প্রথার তিনটি উপাদান কি কি?
উত্তরঃ গিসবার্ট প্রথার তিনটি উপাদানের উল্লেখ করেছেন। যথা—আচারণের ধারাবাহিকতা, সামাজিকতা ও আদর্শগত মূল্য।
ট্যাগঃ সমাজ ও রাষ্ট্রনৈতিক, ২০০+ সমাজ ও রাষ্ট্রনৈতিক প্রশ্ন উত্তর, Download সমাজ ও রাষ্ট্রনৈতিক, PDF সমাজ ও রাষ্ট্রনৈতিক, জেনে নিন সমাজ ও রাষ্ট্রনৈতিক সম্পর্কিত তথ্য, ফ্রী সমাজ ও রাষ্ট্রনৈতিক প্রশ্ন উত্তর।