You are currently viewing প্রধানশিক্ষক এবং সহকর্মীদের মধ্যে সম্পর্ক টানাপোড়েন সমাধান

প্রধানশিক্ষক এবং সহকর্মীদের মধ্যে সম্পর্ক টানাপোড়েন সমাধান

প্রধানশিক্ষক এবং সহকর্মীদের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন সমাধানে রাহাতপুর হাই মাদ্রাসা (উঃমাঃ) প্রধানশিক্ষক শাহীদুর রহমান  যে সমাধানের উপায়গুলি বলেছেন তা শেয়ার করা হল।

আমার একান্ত পেশাগত অভিজ্ঞতার নিরিখে লেখা। প্রধানশিক্ষক এবং সহকর্মীদের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন নিয়ে প্রায়শই একটা অভিযোগ শোনা যায়। এই সমস্যার সৃষ্টি এবং সমাধান নিয়ে আমার কিছু প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা আপনাদের সকলের সঙ্গে শেয়ার করছি।

মনে রাখতে হবে প্রধানশিক্ষকের পদটা ভীষণ চ্যালেঞ্জিং। যাঁরা এই পদে বসেন তাঁরা সব জেনেই শুনেই বসেন। পরে হাপিত্যেশ করাটা তাঁদের সাজেনা। এখানে রয়েছে ছাত্রছাত্রীদের চাপ, অভিভাবকদের চাপ, উর্দ্ধতন কর্ত্তৃপক্ষের চাপ, রাজনৈতিক চাপ, সমাজ বিরোধীদের চাপ, বিক্ষোভ, ডেপুটেশন, অমার্জিত অনুরোধের বিড়ম্বনা, সর্বোপরি কাজের চাপ। তবে যত চাপই থাকুক না কেন একজন প্রধানশিক্ষক যদি আর্থিক হিসেবনিকেশে টনটনা থাকেন মানে স্বচ্ছ থাকেন, তাহলে তাঁর কেউ কিছু বিগড়াতে পারবে না।

আমাকেও বেশ বড় একটি প্রতিষ্ঠান চালাতে হয়। ফলে কিছু অভিজ্ঞতা তো ঝুলিতে জমা পড়েছে। প্রায় পাঁচ একর জমির উপরে বিস্তর বিল্ডিং, সাড়ে চার হাজার ছাত্রছাত্রী এবং ৭০ জন শিক্ষক-শিক্ষকা-শিক্ষাকর্মী নিয়ে আমার সংসার। এখানে মাদ্রাসা বোর্ড, হায়ার সেকেন্ডারি কাউন্সিল এবং ভোকেশনাল কাউন্সিল মিলেমিশে একাকার। অনেক সময় কিছু অসুবিধে হলেও সব কাজ সহকর্মীদের আন্তরিক সহযোগিতায় সময়ের মধ্যে সম্পন্ন হয়।

প্রধানশিক্ষক এবং সহকর্মীদের মধ্যে সম্পর্ক টানাপোড়েন সমাধান

সম্পর্ক দৃঢ়িকরণে প্রধানশিক্ষকের ভূমিকাঃ
১। নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গিঃ
সহকর্মীদের মধ্যে সম্পর্ক ভালো রাখার চাবিকাঠি হলো প্রধানশিক্ষকের নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি। আমি কোনো স্টাফকে আপন মনে করিনা আবার পরও মনে করি না। কেউ আমার সহোদর ভাই-বোন নয়। আমার দৃষ্টিতে সবাই সমান। কোনো একজনকে বিশেষ সুবিধা প্রদান করলে অন্যজনের ভাবাবেগে লাগবেই এবং তাঁদের মনে একটা বিদ্বেষ সৃষ্টি হবে। তবে, যাঁরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে স্কুলের বিভিন্ন কাজে এগিয়ে আসেন তাদের দিয়ে একটু বেশি কাজ করিয়ে নেই। এটা করলে কোনো সহকর্মী আঙ্গুল তুলে কথা বলার সাহস পাবে না।

২। উপস্থিতিঃ
এ বিষয়ে আমি কোনো কম্প্রোমাইজ করিনা। কে কোথা থেকে আসবে, কতদূর থেকে আসবে, কিভাবে আসবে সেটা তাদের নিজস্ব ব্যাপার। প্রতিষ্ঠানের সে বিষয়ে কোনো দায়বদ্ধতা নেই। উপস্থিতির নির্দিষ্ট সময়ের পরে অনুপস্থিত স্টাফকে absent করে দেওয়া হয়। প্রধানশিক্ষকের ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম হয় না। সেইদিন, কারো ইচ্ছে হলে স্কুল করবে অথবা চলে যাবে। তারপর ছুটির ঘন্টা পড়লে সকলে ক্যাম্পাস থেকে বের হতে পারবে। তবে অ্যাকসিডেন্টাল কোন কেস হলে তখন ছাড় দেই।

৩। জব ডিস্ট্রিবিউশনঃ
পঠন-পাঠনের বাইরে শিক্ষক শিক্ষিকাদের কোনো একটি বড় কাজ ভাগ করে দিলে সকলে বেশ খুশি মনেই কাজটি করে দেয়। যদি কারো অসুবিধে থাকে সেটা বিবেচনা করি। এটা করতে পারলে কারো অভিযোগ থাকে না।

৪। ওয়ার্কিং টিমঃ
অভিজ্ঞতা এবং আগ্রহের নিরিখে সকল স্টাফের সম্মতিতে বিভিন্ন উপসমিতি বা ওয়ার্কিং টিম তৈরি করি ফলে সহকর্মীরাও বিভিন্ন কাজে লিপ্ত থাকে। তারা কাজ করে আমি শুধু পর্যবেক্ষণ করি। বলে আমাকে ততবেশি চাপ নিতে হয় না।

৫। প্রযুক্তির সহায়তাঃ
এখনকার দিনে একজন প্রধানশিক্ষককে অবশ্যই আপডেট হতে হবে, নইলে পদে পদে হোঁচট খাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আমি ২০১৫ থেকেই Online School Management Software ব্যবহার করি। ফলে গোটা স্কুলটাকেই আমি পকেটে নিয়ে ঘুরতে পারি। আমাদের দুখানা অত্যাধুনিক কম্পিউটার ল্যাবে ৪০টি কম্পিউটার রয়েছে। আমার প্রত্যেক স্টাফ কম্পিউটার অপারেশনে ট্রেইন্ড। কমবেশি সকলে কম্পিউটার অপারেট করতে পারে। শিক্ষক শিক্ষিকারা খাতা দেখে নিজের মোবাইল থেকে সরাসরি মার্কস আপলোড করে দেয়। আমি এক ক্লিকে নির্ভুল রেজাল্ট বের করে নেই। পুরো ক্যাম্পাসে ৩৬খানা সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো আছে। ফলে আমার চেয়ারে বসে ক্যাম্পাসের প্রতিটি অংশে নজর রাখতে পারি। এই সব প্রযুক্তির সাহায্য নিলে প্রধানশিক্ষক এবং সহকর্মীদের উপর কাজের চাপ অনেকটা কমে যায়।

৬। সার্ভিস ফাইলঃ
সহকর্মীদের সার্ভিস রেকর্ড সুনিশ্চিত রাখতে প্রত্যেক সহকর্মীর পেশাগত সমস্ত ডকুমেন্ট একটি সার্ভিস ফাইলে আবদ্ধ রাখতে হবে যার মধ্যে থাকবে সার্ভিস বুক, লিভ রেজিস্টার, রেকমেন্ডেশন লেটার, অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার, এপ্রুভাল লেটার, স্কুলের রিকোগনিশন কপির জেরক্স, নমিনেশন ফর্ম, বদলির ডকুমেন্ট (যদি থাকে), পূর্ববর্তী চাকরির ডকুমেন্ট (যদি থাকে), পোস্ট স্যাংশনিং মেমোর কপি, ওভারড্রন পেমেন্ট স্লিপ(যদি থাকে), একাডেমিক রেকর্ড, তাঁর পেশাগত অন্যান্য ডকুমেন্ট, ছুটির দরখাস্ত এবং তৎসংক্রান্ত সমস্ত MC Resolution এর কপি ইত্যাদি। উক্ত ফাইলে এসব ডকুমেন্ট মজুত থাকলে তাঁর বদলির সময় কিংবা অবসরের সময় এক ঘন্টায় তাঁর কাজ করে দেওয়া যায়। অনেক প্রধানশিক্ষক এই কাজটি গুছিয়ে না রাখার জন্য প্রধানশিক্ষক বিড়ম্বনায় পড়েন এবং সহকর্মীদের ভোগান্তি সইতে হয়।

৭। সার্ভিস বুকঃ
প্রত্যেক সহকর্মীর সার্ভিস বুক আপডেট রাখা একজন প্রধানশিক্ষকের একটি অন্যতম কাজ। অনেকে অবহেলায় তা ফেলে রাখেন। ফলে কোনো সহকর্মীর আকস্মিক মৃত্যু হলে তখন তাঁর পরিবার ভুগতে থাকে। এই কাজটি স্বচ্ছতা এবং নিরপেক্ষতার সাথে করার জন্য আমি প্রত্যেক সহকর্মীর জন্য দুটি করে সার্ভিস বুক করেছি। একটা অফিসে থাকে অপরটি সহকর্মীর কাছে থাকে। যদিও নিয়মমাফিক তা স্টাফদের কাছে থাকার কথা নয়, কিন্তু একটি ডুপ্লিকেট কপি রাখলেও তা কোনো দোষের নয়। তাতে বরং প্রধানশিক্ষক এবং সহকর্মীদের মধ্যে বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ে।

৮। সহকর্মীদেরকে সহযোগিতাঃ
সহকর্মীদের প্রাপ্য এরিয়ারের অর্থ, তাঁদের চাকরির অনুমোদন, ছুটির অনুমোদন, পেনশনারি বেনিফিট, বদলির সুযোগ, উচ্চশিক্ষার অনুমোদন প্রভৃতি কাজগুলো একজন প্রধানশিক্ষককে সুচারুরূপে সম্পন্ন করতে হবে এবং এটা তাঁদের দায়িত্ব। এ বিষয়ে অযথা হয়রানি করলে সম্পর্কের স্থিতিশীলতা বজায় রাখা সম্ভব হয় না।

৯। ডি আই অফিস – একটি ঘুঘুর বাসাঃ
হ্যাঁ, তবে এ বিষয়ে প্রধানশিক্ষকরাও অনেক সময় অসহায় হয়ে পড়েন সংশ্লিষ্ট অফিসগুলির জন্য। আপনারা মানবেন কি না জানি না ডি আই অফিসগুলো ঘুঘুর বাসাতে পরিণত হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ে যথাযথভাবে ফাইল জমা করার পরেও দিনের পর দিন ফাইলের মুভমেন্ট হয়না। কখনও ফাইল হারিয়ে ফেলে। তার উপর চা-পানির আবদার। অনেক সময় সেটা পূর্ণ করলেও কাজ হয় না। একটা কাজের জন্য কতদিন ধর্না দিতে হয় এটা অনেক সহকর্মীরা বুঝতেও চান না।

১০। সহকর্মীদের সুবিধাপ্রদানঃ
সহকর্মীদের ন্যূনতম প্রাথমিক সুবিধাগুলি প্রদান করা প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব এবং সেটা প্রধানশিক্ষককে দেখতে হবে।

আমাদের তিনটি সুসজ্জিত স্টাফরুম রয়েছে (তার মধ্যে মহিলা সহকর্মীদের জন্য একটি) এবং প্রত্যেকটির সাথে স্যানিটারি অ্যাটাচড বাথরুম, পর্যাপ্ত চেয়ার, টেবিল, লাইট, ফ্যান, পার্সোনাল ড্রয়ার এবং একুয়াগার্ড রয়েছে। তবে এর সঙ্গে একটি কঠোর নির্দেশও রয়েছে – এখানে কেউ কোনো সাম্প্রদায়িক এবং রাজনৈতিক বিদ্বেষমূলক আলোচনা উত্থাপন করতে পারবেনা। কোনো গঠনমূলক বা রুচিশীল বিনোদনমূলক আলোচনা করতেই পারে।

২০০০ বর্গফুটের একটি অত্যাধুনিক ক্যান্টিন রয়েছে যেখানে ছাত্র-শিক্ষক সকলে তাদের পছন্দমত খাবার খেতে পারে – ভাত, রুটি, তরকারি, চা স্ন্যাকস ইত্যাদি। ফলে তাদের বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন পড়েনা।

সম্পর্ক সুদৃঢ়করণে সহকর্মীদের ভূমিকাঃ
স্কুলটা প্রধানশিক্ষক একাই চালান না। তিনি শুধু Pivotal Point হিসেবে কাজ করেন। আমাদের যে বেতনটা দেওয়া হয় সেটা শুধু ক্লাসে দুটো লেকচার দেওয়ার জন্য নয়, পুরো কাজগুলি সমন্বয়ের সাথে যথা সময়ে সম্পন্ন করার জন্য। তাই এ ক্ষেত্রে প্রত্যেক সহকর্মীর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

১১। ছুটিঃ
ছুটি কিন্তু অধিকার নয়। এটা প্রয়োজনভিত্তিক। সত্যিকারের প্রয়োজনে শিক্ষক-শিক্ষিকা-শিক্ষাকর্মীরা নানাবিধ ছুটি ভোগ করতে পারেন – Casual Leave, Medical Leave, Maternity Leave, Miscarriage Leave, Deputation Leave, Child Care Leave, Quarantine Leave, Special Leave, Lien Leave, Leave on Half Average Pay, Commuted Leave, Leave without Pay ইত্যাদি। এগুলো সব আমাদের প্রয়োজনের জন্য। তবে CL ছাড়া প্রত্যেক প্রকারের লিভ কমিটি দ্বারা অনুমোদন করিয়ে নিতে হবে। কিছু লিভে বোর্ডের অনমোদন লাগে।

আবার অনেকেই এই ছুটির অপব্যবহারও করেন। এমনও অভিজ্ঞতা আমাদের আছে কোনো সহকর্মী CCL নিয়ে দীঘায় ঘুরতে গেছে আবার ফেসবুকে তার স্ট্যাটাসও দিয়েছে। আবার এটাও দেখা গেছে কোনো সহকর্মী কোনো পরিচিত সরকারি ডাক্তারের কাছ থেকে মিথ্য সার্টিফিকেট সংগ্রহ করে প্রধানশিক্ষকের কাছে জমা করে ছুটি ভোগ করে। কেমন লাগে বলুন তো?

আবার সহকর্মীদের মধ্যে কিছু উটকো নেতা থাকে। মনে রাখবেন এই উটকো নেতার জন্য কোনো ছুটি বরাদ্দ থাকেনা। কেবলমাত্র নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি অথবা সরকারি কাজে দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো শিক্ষককে ছুটি দেওয়ার নিয়ম রয়েছে নির্ধারিত দিনের জন্য। সেই ক্ষেত্রে তাঁদের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের চিঠি প্রধানশিক্ষকের কাছে জমা করতে হবে।

কোনো শিক্ষক বা শিক্ষাকর্মী পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, জেলা পরিষদের সভাধিপতি, এম এল এ, এম পি হলে এঁরা Special Leave without Pay ভোগ করতে পারেন। পঞ্চায়েতের সদস্য ও প্রধান, পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলাপরিষদের সদস্য এঁরা শুধু মিটিং এর দিনগুলিতে ছুটি পাবেন। এর বাইরে বাকি কোনো শিক্ষক নেতা ছুটি পাবেন না। এই রকম একজন উটকো নেতার ৩২ দিনের বেতন কেটেছিলাম। তারপর উটকো নেতাগিরি সব বন্ধ।

১২। ক্লাসঃ
প্রত্যেক স্কুলে দু-একজন ফাঁকিবাজ সহকর্মী থাকাটা অস্বাভাবিক নয়। দেখবেন কিছু (সবাই নয়) শিক্ষিক-শিক্ষিকা নিজেদের allotted class গুলো নিতেই কেমন lethargic হয়ে পড়ে। ৩৫ মিনিটের ক্লাসে যেতে যেতেই ১০-১৫ মিনিট অতিবাহিত করে আবার ঘন্টা পড়ার ৫-১০ মিনিট আগেই বেরিয়ে আসে। আবার কখনও কখনও নিজের পিরিয়ডের কথাই ভুলে যায়। কেমন লাগে বলুন তো?

এসব ক্ষেত্রে আমি প্রকাশ্যে তাদের নাম ধরে মাইকে ঘোষণা করি – অমুক, তোমার ক্লাসের ১০ মিনিট চলে গেল। ব্যস, পরের বার আর বলতে হয়না।

এখানেই আমাদের দায়িত্ববোধটা লুকিয়ে আছে। ধরুন, একজন শিক্ষক মাসে ১০০টা ক্লাস নিলে এবং তার মাসিক বেতন ৫০০০০ টাকা হলে একটি ক্লাসের মূল্য হয় ৫০০ টাকা। আমরা কি কোনোদিন নিজেদের আত্মবিশ্লেষণ করেছি আমরা ৫০০টাকা বাবদ কী পড়ালাম বা কতটুকু পড়ালাম? আচ্ছা বলুন তো আমাদের সন্তানকে কোনো শিক্ষক এভাবে পড়ালে আমাদের কেমন লাগবে?

১৩। পরীক্ষাঃ
অনেক সময় দেখা যায়, পরীক্ষা চলাকালীন কিছু সহকর্মী পরীক্ষার ঘর ছেড়ে এক জায়গায় জটলা করে খোস মেজাজে গল্প করে। ফলে পরীক্ষার ঘরটি বাচ্চাদের কাছে মুক্তাঙ্গনে পরিণত হয়। অনেকে পরীক্ষার খাতায় সহি করার সময় ক্লাস, সেকসন, রোল নং, সাবজেক্ট চেক করেনা। ফলে পরবর্তীতে সেই খাতা নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়। অনেকে আবার রোল অনুসারে খাতাগুলো না সাজিয়ে তাড়াহুড়ো করে অফিসে জমা করে চলে যায়। ফলে এক ক্লাসের খাতা অন্য ক্লাসের বান্ডিলে চলে যায়। অনেকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে খাতাগুলো নিয়ে যায় না এবং মূল্যায়ন সম্পন্ন করে না। ফলে রেজাল্টের সময় সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। পরীক্ষার ডিউটি আবশ্যিক হওয়া সত্বেও কিছু শিক্ষক আগে থেকে না জানিয়ে আকস্মিকভাবে অনুপস্থিত থাকে। ফলে Exam Sub-committee কে হিমসিম খেতে হয়।

একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্থিতিশীলতা টিকিয়ে রাখতে হলে এই সম্পর্কটাকে আগে টেকানো দরকার। এখানে বিভিন্ন শিক্ষক-শিক্ষিকা-শিক্ষাকর্মী ভিন্ন ভিন্ন মানসিকতা বহন করবে এটাই স্বাভাবিক কিন্তু শিক্ষকতার মানসিকতাকে সকলকে বহন করতে হবে। এর মধ্যে অন্য কিছু ভেজাল ঢুকলে তার কুপ্রভাব আমাদেরই বহন করতে হবে।

উপরোক্ত দীর্ঘ আলোচনায় আমাকে সমৃদ্ধ করলে বাধিত হবো। সকলে সুস্থ থাকুন। ধন্যবাদান্তে-

শাহীদুর রহমান
প্রধানশিক্ষক
রাহাতপুর হাই মাদ্রাসা (উঃমাঃ)
উত্তর দিনাজপুর ।

Leave a Reply